অনলাইনে দিনে ৪ হাজারের বেশি গরু–ছাগল বিক্রি
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনলাইন পশুর হাট থেকে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার গবাদিপশু কেনাবেচা হয়েছে। ক্রেতারা ২০৬ কোটি টাকায় ওই সংখ্যক পশু কিনেছেন।
গত ২ জুলাই অনলাইন লাইনে পশুর হাটের কার্যক্রম শুরুর পর গতকাল ৭ জুলাই পর্যন্ত ৬ দিনে এই সংখ্যক পশু বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে পশু বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৪টি।
এই ৬ দিনে কোরবানিযোগ্য এক লাখ ৪১ হাজার গবাদিপশুর তথ্য অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এবার অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম আলোকে ৭৪১টি অনলাইন বাজারের তথ্যের ভিত্তিতে এসব কথা জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অনলাইন বাজারের মধ্যে সরকারি উদ্যোগ ৫৩০টি এবং বেসরকারি উদ্যোগ ২১১টি পরিচালিত হচ্ছে। তবে এর বাইরেও অনেকে ব্যক্তি পর্যায়ে অনলাইনে পশু বিক্রি করছেন। তবে সেই তথ্য এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর ৯৪ লাখ ৫০ হাজারের মতো পশু কোরবানি হয়েছে। তার মধ্যে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। এবার এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩০৮টি পশু অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার করোনা পরিস্থিতি খারাপ। তাই অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির সম্ভাবনাও বেশি।’
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৭ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে সবচেয়ে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু বিক্রি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। বিভাগটিতে ৫১ হাজার ৬৪৯টি গবাদিপশুর তথ্য অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। তার মধ্যে ১১১ কোটি টাকায় ১৫ হাজার ৭৫টি পশু কেনাবেচা হয়েছে। অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিতে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা, তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজশাহী বিভাগ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা. দেবাশীষ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনা আসার পরে অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রি জোরদার হয়েছে। গতবারের তুলনা এ বছর অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রির পরিস্থিতি ভালো। গতবারের তুলনায় মানুষ বেশি সচেতনও হয়েছে।’
চলতি বছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ১৯ লাখ। তার মধ্যে গরু-মহিষ ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার, ছাগল-ভেড়া ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার এবং অন্যান্য ৪ হাজার ৭৬৫টি। কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মধ্যে গৃহপালিত গবাদিপশুর সংখ্যা ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ৪৫২টি। খামারে পালন ৬২ লাখ ৩৬ হাজার। এসব কোরবানিযোগ্য পশু উৎপাদনের খামারির সংখ্যা ৬ লাখ ৯৮ হাজার।
অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির কার্যক্রম কীভাবে নজরদারি করা হচ্ছে জানতে চাইলে উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা বলেন, ‘খামারিরা আমাদের কাছে আসছেন অথবা খামারিদের নিজস্ব ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাঁরা পশুর তথ্য আপলোড করছেন। সারা দেশে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাদের মাধ্যমে খামারির আপলোড করা পশুর সুস্থতা, ওজন, দাম নজরদারি করছি। কেউ অসুস্থ পশু বা ভুল তথ্য দিলে তা সরিয়ে দিচ্ছি।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার প্রয়োজনের তুলনায় কোরবানির পশু বেশি। ভারত বা অন্য দেশ থেকে পশু আমদানি নিষিদ্ধ রয়েছে। চোরাইপথে যাতে কোরবানির পশু দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।