‘অধিকার’–এর নিবন্ধন নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জাতিসংঘের

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ‘অধিকার’–এর নিবন্ধন নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারসংক্রান্ত হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। আজ শুক্রবার সংস্থার জেনেভা কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। সংস্থার  মুখপাত্র রাবিনা সামদাসানি এ বিবৃতি পাঠান।

৫ জুন এনজিওবিষয়ক ব্যুরো অধিকারের নিবন্ধন নবায়নের আবেদন নামঞ্জুর করে। নিবন্ধন নবায়ন নিয়ে অধিকারের একটি রিটের বিষয়ে হাইকোর্টের রুলের ওপর এখন শুনানি চলছে। এর মধ্যেই সংগঠনটির আবেদন নামঞ্জুর করে এনজিও ব্যুরো।

প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নবায়নের জন্য অধিকার ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এনজিওবিষয়ক ব্যুরোতে আবেদন করে। তবে নবায়ন না হওয়ায় অধিকারের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কেন নিবন্ধন নবায়নের আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে না, সেই মর্মে ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। অধিকারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল আমিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে ওই দিন জানান, এখনো পর্যন্ত সেই রুলের শুনানি চলছে।

আজ ওএইচসিএইচআরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের খ্যাতনামা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান অধিকারের নিবন্ধন নবায়ন না করার সিদ্ধান্তের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। নবায়ন না করার কারণ হিসেবে অধিকারের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার চালানো এবং ভুল তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ আনা হয়। আমরা সরকারের কাছে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে অধিকারকে পূর্ণ বিচারিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক। আমরা উদ্বিগ্ন এই কারণে যে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতিসংঘের কাছে তুলে ধরতে নাগরিক সংগঠনগুলোর সক্ষমতাকে দুর্বল করবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, অধিকার দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরে। ২০১৩ সাল থেকে এ সংগঠনটির বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিহিংসামূলক তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তাদের কর্মকাণ্ডকে রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকারবিরোধী অ্যাখ্যা দিয়ে এ ধরনের প্রতিহিংসা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।

২০১৪ সাল থেকে অধিকারের নিবন্ধন নবায়নের বিষয়টি এনজিওবিষয়ক ব্যুরোতে ঝুলে আছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এর ফলে সংগঠনটির কর্মকাণ্ড চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালে অধিকারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। এ হিসাব চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিক সংগঠনগুলোর শক্তিশালী অবস্থান ও বৈচিত্র্যময় কাজের ঐতিহ্য আছে। প্রতিহিংসার ভীতি থেকে দূরে থেকে এসব সংগঠন যেন মুক্তভাবে কাজ করতে পারে এমন সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে অধিকারের নিবন্ধন নিয়ে ওএইচসিএইচআরের এই বিবৃতিটি ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাঁর টুইটার থেকে টুইট করেছেন আজ।