জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংলাপে ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নেন ১৯ জন। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সংলাপে বিশিষ্টজনেরা জাতীয় নির্বাচনে সবার ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার না করা, ভোটারদের বাধাহীনভাবে ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করা, ভোটের আগে-পরে ভোটারদের বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ বলেন, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংবিধান ও আইনে ইসিকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা তারা কতখানি প্রয়োগ করতে পারবে, সেটি অনেকাংশে নির্ভর করে নির্বাচনকালীন সরকারের ওপর। নির্বাচনকালীন সরকার এমন হতে হবে, যাদের ভোটের ফলাফল নিয়ে কোনো আগ্রহ থাকবে না।
বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কমিশন যদি মনে করে, নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে আইন ও সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, তাহলে তারা সরকারকে প্রস্তাব দেবে। আর যদি মনে করে, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগের মানসিকতা রাখতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রমুখ সংলাপে বক্তব্য দেন।
সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তাঁরা বিশিষ্টজনদের প্রস্তাব ও পরামর্শ শুনেছেন। এসব পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
দায়িত্ব নেওয়ার পর অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করাটা ইসির একধরনের রেওয়াজ। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৫ দিনের মাথায় ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে প্রথম সংলাপ করে। সেদিন ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সংলাপে এসেছিলেন মাত্র ১৩ জন। শিক্ষাবিদদের পর আজ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সংলাপ করল ইসি।