সাগরে লঘুচাপ, সারা দেশে ভারী বৃষ্টি

সিলেটে শুক্রবার বিকেলে মুষলধারে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির মধ্যে ছাতা হাতে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা। খাসদবীর এলাকা, সিলেট, ৪ অক্টোবরছবি: আনিস মাহমুদ

শেরপুরের উত্তরে ভারতের মেঘালয়–আসামে হঠাৎ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভাটিতে শেরপুরেও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে শেরপুরে ২৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি মিলে শেরপুরে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, বঙ্গোপসাগরে এরই মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শুরু করে মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি বাড়তে পারে। রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলের আকাশে মেঘ বাড়তে পারে। কোথাও কোথাও হঠাৎ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, গতকাল দেশের উত্তরাঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীতে দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হয়েছে কম, ১২ মিলিমিটার। ঢাকা বিভাগের মধ্যে আরিচায় সর্বোচ্চ ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাবে এ নিয়ে দেশের ভেতরে চলতি বছর ৯ দফা বন্যা হয়ে গেল। গত এক দিনে শুধু শেরপুরের সীমান্ত নদী ভোগাই–কংস নদের পানি সাড়ে ৬ মিটার বেড়েছে। ওই পানি আজকের মধ্যে ময়মনসিংহ হয়ে নেত্রকোনা দিয়ে নামবে। অর্থাৎ ওই দুই জেলার নিম্নাঞ্চল আজকের মধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে পারে। এ নিয়ে এ বছর সিলেটে মোট তিনবার, ফেনী–কুমিল্লা–নোয়াখালীতে তিনবার, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় একবার করে ও শেরপুর–ময়মনসিংহে একবার বন্যা হয়ে গেল।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, এবার বর্ষা বেশি শক্তিশালী ছিল। উজানে ভারতীয় অংশে ও বাংলাদেশে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এবার বন্যার প্রবণতা বেশি। আর বড় নদ–নদী অববাহিকা, যেমন ব্রহ্মপুত্র–গঙ্গা–পদ্মায় বৃষ্টি ও বন্যা কম হয়েছে।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী দুই দিন দেশের অন্তত চারটি জেলায় বন্যার পানি থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের উজানে ভারতীয় অংশেও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে ওই দুই বিভাগের নদ–নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। তবে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা কম। দেশের বাকি এলাকায় আপাতত পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।