নিষিদ্ধের পর সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নেই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাছবি: প্রথম আলো

সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করার পর আজ সোমবার এ দুই জায়গায় দাবি নিয়ে কাউকে অবস্থান করতে দেখা যায়নি। দুই জায়গাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

গতকাল রোববার রাতে সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর রাতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

আরও পড়ুন

আজ সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিন বাসভবনের সামনের রাস্তায় বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনকারীদের যে ভিড় ছিল, সেটা নেই। সেখানে আধা ঘণ্টা অবস্থান করার পর দাবিদাওয়া নিয়ে কাউকে আসতে দেখা যায়নি। বাসভবন ঘিরে পিজিআর, এসপিবিএন, র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

সচিবালয়ের সামনের সড়ক বেশ ফাঁকা দেখা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

বেলা পৌনে ১১টার দিকে সচিবালয়ের সামনের সড়কে গিয়ে কোনো আন্দোলনকারীকে দেখা যায়নি। সচিবালয়ের সামনে আবদুল গনি সড়কে যান চলাচল সীমিত রয়েছে। রেল ভবন থেকে গুলিস্তানের দিকে যেতে সচিবালয়ের সামনের সড়কে সেনাবাহিনীর একটি এপিসি (সাঁজোয়া যান) রাখা আছে। সচিবালয়ের প্রধান ফটকে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। একটু এগিয়ে গেলে কয়েকটি গাড়ি নিয়ে র‍্যাব সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানেও এপিসি নিয়ে সেনাসদস্যরা রয়েছেন।

গতকাল রাত নয়টায় পর্যন্ত চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন আনসার সদস্যরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না বলে জানান তাঁরা।

আরও পড়ুন

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘সবাই রাজুতে আসেন। স্বৈরাচারী শক্তি আনসার হয়ে ফিরে আসতে চাচ্ছে। দাবি মানার পরও আমাদের সবাইকে সচিবালয়ে আটকে রাখা হয়েছে।’

হাসনাত আবদুল্লাহর ঘোষণার পর রাজধানীর টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জমায়েত হন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ হাওলাদারসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন।

সচিবালয়ের ফটকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান
ছবি: প্রথম আলো

এ ঘটনার পরপর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ডিএমপি। এতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অরডিন্যান্স (অরডিন্যান্স নং-৭৬)–এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামীকাল (আজ) ২৬ আগস্ট ২০২৪ (সোমবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের (যমুনা) আশপাশের এলাকায় যেকোনো সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।

আরও পড়ুন