স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন চান চিকিৎসকেরা

বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবেছবি: সংগৃহীত

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে জুডিশিয়াল সার্ভিসের মতো আলাদা করার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা মানবেন না স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এই সুপারিশকে ‘একতরফা’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন ও উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব উম্মে তানিয়া নাসরীন। এ সময় আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মফিজুর রহমানও বক্তব্য দেন। পরে সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে বলা হয়, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারণী পদে একজন সরকারি চিকিৎসক সচিব হিসেবে বেশি যৌক্তিক, নাকি স্বাস্থ্য খাত নিয়ে পড়াশোনা করেননি এমন ব্যক্তির সচিব হওয়া বেশি যৌক্তিক? নিশ্চয়ই একজন সরকারি চিকিৎসক স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে অনেক বেশি জানবেন। অথচ স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারণী পদগুলোতে কোনো সরকারি চিকিৎসক নেই। বিগত সময়ে সচিবালয়ে অচিকিৎসক কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগোপযোগী না করে বরং উল্টো পথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কায়েম করেছে। যার ফলে স্বাস্থ্য খাত আজও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কার প্রস্তাব বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার যে ‘হঠকারী’ সুপারিশ করেছে, তা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি ও বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান তাঁদের কিছু সুপারিশের কথা তুলে ধরেন। কমিশনের সুপারিশের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখা, উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ ও অন্য ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ করা ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। এর পর থেকে ক্যাডারগুলোর মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।