আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গুণগত পরিবর্তন হবে: ইইউ রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেনছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরে নতুন সরকারের মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের মাত্রার গুণগত পরিবর্তন হবে। অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আলোকে পরিচালিত ওই সম্পর্ক হবে অনেক বেশি রাজনৈতিক।

আজ বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চার্লস হোয়াইটলি এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, পরবর্তী পাঁচ বছরে আমাদের সম্পর্কের ধাপ পরিবর্তন হতে দেখব আমরা, যেটি চালিত হবে নতুন অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আলোকে। এবারের অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তিতে ২০০১ সালে হওয়া চুক্তির তুলনায় সম্পর্কের ধরন হবে অনেক বেশি রাজনৈতিক। যেখানে ২০০১ সালের চুক্তি অনুযায়ী সম্পর্ক মূলত ছিল উন্নয়ন সহযোগিতাকেন্দ্রিক।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত জানান, ইইউ যে কাজ বাংলাদেশে করে, তার একটি অংশ উন্নয়ন সহযোগিতা। এক বছর আগে দুই পক্ষের প্রথম রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছিল এবং সেখানে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিও ছিল। নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা হওয়া গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, বিশ্বের বিস্তৃত পরিবেশে কী ঘটছে, তা নিয়েও এবং কীভাবে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিন্ন অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোতে প্রভাব রাখতে পারে, সেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে। তাতে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন সংঘাতও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

খুব শিগগির ‘অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি’ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হবে বলে জানান চার্লস হোয়াইটলি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে এবং আমরা আমাদের বিবৃতি দিয়েছি।’

তবে কি ইইউ অতীত ভুলে যাওয়ার নীতি অনুসরণ করে—প্রশ্নের জবাবে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘অবশ্যই না। আমাদের বিশেষজ্ঞ দল (নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্ত) এখনো শহরে আছে, তারা এখনো যায়নি। তাদের প্রতিবেদন আমরা জনসমক্ষে প্রকাশ করব।’

প্রতিবেদনের সুপারিশ (নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ) নিয়ে অবশ্যই কাজ করবেন বলে উল্লেখ করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘যেভাবে গত মিশনেরটা নিয়ে কাজ করেছি, সেভাবে এটা নিয়ে কাজ হবে। এটা হচ্ছে, যেখানে প্রয়োজন, সেখানে সহযোগিতা ও সম্পৃক্ত হওয়া। সুতরাং অভিন্ন উদ্বেগ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করাটাই হলো সম্পর্ক।’

ইইউ-বাংলাদেশের কাজের অগ্রাধিকারের বিষয়ে এক প্রশ্নে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, উন্নয়ন সম্পৃক্ততার বিষয়ে অগ্রাধিকার ঠিক করা হয়েছে। সম্প্রতি ইইউর গ্লোবাল গেটওয়ে কর্মসূচির আওতায় হওয়া ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। বাংলাদেশ হচ্ছে গ্লোবাল গেটওয়ে কর্মসূচিতে বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের একটি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার মাধ্যমে এটাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।