এবার ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন জমা
পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানোর দুই দিনের মাথায় খুচরা পর্যায়ে ভোক্তাদের জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। গড়ে ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে তারা।
এর আগে গত সোমবার পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এখনি খুচরা দামে প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছিল বিইআরসি। এরপর পিডিবি সবার আগে খুচরা দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দিয়েছে। বাকি পাঁচ বিতরণ সংস্থার মধ্যে দুটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে জমা দিয়েছে বলে বিইআরসি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বাকি তিনটিও আজ বিকেলের মধ্যে জমা দিতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ১ টাকা ৪৭ পয়সা বাড়ানোর আবেদন করেছে পিডিবি। আর পাইকারি দাম বেড়েছে প্রতি ইউনিটে এক টাকা তিন পয়সা। দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দিতে বাকি বিতরণ সংস্থার প্রস্তুতিও শেষের দিকে, যেকোনো সময় তারা জমা দিতে পারে। সবাই গড়ে ২০ শতাংশ বাড়ানোর আবেদন করবে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, কমিশনের আবেদনপত্র গ্রহণ শাখায় তিনটি আবেদন জমা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে এখনো তাঁর দপ্তরে কোনো আবেদন পৌঁছায়নি। সব বিতরণ সংস্থার আবেদন জমা হলে তা যাচাই–বাছাই করে আইন ও বিধি অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিইআরসির কর্মকর্তারা বলছেন, আবেদনে সব তথ্য ও সংযুক্ত প্রমাণাদি ঠিক থাকলে তা আমলে নেবে কমিশন। এরপর একটি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি প্রতিবেদন তৈরির পর সব পক্ষকে নিয়ে গণশুনানি হবে। এরপর গণশুনানি পরবর্তী কোনো ব্যাখ্যা বা জবাব নেওয়া হতে পারে। এরপর আদেশ ঘোষণা করবে কমিশন। এতে অন্তত এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে।
২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি। সরকারের ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বিবেচনায় নিয়ে গড়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দাম বাড়ানো হয় এবার। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময় পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। সবশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। ওই সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। একই সময় খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।