জুড়ীতে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসানোর চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তারপ্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে পূর্ববিরোধের জেরে একটি বাড়ির মন্দিরে আগুন দিয়ে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা জানাজানির পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল গিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্ধার করেন এবং ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের বিনন্দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে আজ শুক্রবার জুড়ী থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বিনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় আতিয়াবাগ চা-বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অসিত রুদ্রপাল (৪৫) ও একই এলাকার নাদিম আহমদ (১৮)।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক অসিত রুদ্রপালসহ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে প্রতিবেশী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিনের (৮০) দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি আলাউদ্দিন মারামারির অভিযোগে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে অসিতদের বাড়ির মন্দিরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে আলাউদ্দিনকে বাড়িতে ধরে আনেন কয়েকজন ব্যক্তি। তাঁকে অসিতদের বাড়িতে আটকে রাখেন তাঁরা। খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে সেখান থেকে অসিত ও নাদিমকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় আজ বিকেল পাঁচটার দিকে আলাউদ্দিন বাদী হয়ে অসিত রুদ্রপালসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে আলাউদ্দিনকে আটকে রাখার পর স্থানীয় অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাটি লাইভ করেন। তাতে দেখা যায়, অসিতদের বাড়ির উঠানে একটি চেয়ারে বসা আলাউদ্দিন। বেশ কিছু লোক তাঁকে ঘিরে রেখেছেন। তখন কেউ কেউ প্রশ্ন করছিলেন, কেন তিনি মন্দিরে আগুন দিলেন? জবাবে বারবার তিনি অস্বীকার করছিলেন।

জুড়ী থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি সাজানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে। পূর্ববিরোধের জেরে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনকে ফাঁসাতে প্রতিপক্ষের লোকজন কাজটি করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অসিত রুদ্রপাল বিষয়টি স্বীকার করেন। আটক দুজনকে মুক্তিযোদ্ধার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে। অন্যান্য আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হবে।