ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
কোটা আন্দোলনের নামে ‘সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগে’ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তথ্য জানতে চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব খান শাহানুর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শাহানুর আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মন্ত্রণালয়ের কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করে অতি উৎসাহী হয়ে এই চিঠি দিয়েছেন। এতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে দায়িত্বে চরম অবহেলা করায় আজ মঙ্গলবার তাঁকে বরখাস্ত করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এর আগে গতকাল সোমবার খান শাহানুর আলমের সইয়ে জারি করা একটি চিঠি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চিঠির বিষয় ছিল, গত ১৬ থেকে ২১ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় সংঘটিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ তথ্য সরবরাহ প্রসঙ্গে। ওই ছয় দিনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে তথ্য দিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থায় চিঠি দেন খান শাহানুর আলম। চিঠিতে বলা হয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও মূল্য–সম্পর্কিত তথ্য নির্ধারিত ছকে আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে তদন্ত কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে পাঠাতে হবে।
ওই চিঠি জারির পর দুই ঘণ্টার মধ্যে তা বাতিল করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, ‘ভুলক্রমে’ ওই চিঠি জারি করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, খান শাহানুর নিজে নিজে এই চিঠি জারি করেছেন। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেননি। ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বিপদে ফেলতেই তিনি এ কাজ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার পৃথক চিঠিতে খান শাহানুর আলমকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়। এ বিষয়ে অফিস আদেশে বলা হয়, এ ধরনের গুরুতর ঘটনার (চিঠি দেওয়া) কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এভাবে চিঠি দিয়ে ওই কর্মকর্তা দায়িত্বে চরম অবহেলার মাধ্যমে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮–এর ২ (খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অপরাধ করেছেন।
এ বিষয়ে ধর্মসচিব হামিদ জমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা কাউকে না জানিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে এ চিঠি জারি করেছেন। আমাদের কাউকে বিষয়টি জানাননি। এতে মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। চাকরির পরিপন্থী কাজ করায় তাঁকে (খান শাহানুর আলম) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’