গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি, ১১ থানা–উপজেলায় জাতীয় নাগরিক কমিটি
সাংগঠনিক বিস্তৃতির অংশ হিসেবে এবার গাইবান্ধা জেলায় ২৩৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জেলা পর্যায়ে এটি তাদের ১৮তম কমিটি। আর জাতীয় নাগরিক কমিটি দেশের আরও ১১টি থানা–উপজেলায় প্রতিনিধি কমিটি গঠন করেছে। এ নিয়ে দেশের ১০০টি থানা–উপজেলায় কমিটি করল তারা।
গত ১৫ ডিসেম্বর ছয় মাসের জন্য গাইবান্ধা জেলা কমিটি অনুমোদন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। গতকাল সোমবার সংগঠনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কমিটি প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে ২০ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে আরও ১১ থানা–উপজেলায় প্রতিনিধি কমিটি গঠনের কথা জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলার ২৩৮ সদস্যের কমিটিতে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ মিয়াকে আহ্বায়ক, একই প্রতিষ্ঠানের বায়েজীদ বোস্তামীকে সদস্যসচিব, ঢাকা কলেজের মো. মাসুদ রানা শেখকে মুখ্য সংগঠক ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জাহিদ হাসানকে মুখপাত্র করা হয়েছে। কমিটিতে ১৭ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৭ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ১৫ জনকে সংগঠক ও ১৮৫ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
এক দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫১ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটিতে মোহাম্মদ সাদ্দামকে আহ্বায়ক, মো. খালেদ সাইফুল্লাহকে সদস্যসচিব, নাহিদ আলমকে মুখ্য সংগঠক ও সাকিব উল্লাহকে মুখপাত্র করা হয়। কমিটিতে ১৭ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ২০ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ২৪ জনকে সংগঠক ও ৮৬ জনকে সদস্য করা হয়।
এর আগে ১০ ডিসেম্বর গাজীপুর জেলায় ৩০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করে তারা। ওই কমিটিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুহিমকে আহ্বায়ক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. মহসিন উদ্দীনকে সদস্যসচিব, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবিউল হাসানকে মুখ্য সংগঠক ও ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের বশির আহম্মেদকে মুখপাত্র করা হয়েছে। কমিটিতে ১৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৬ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ১৫ জনকে সংগঠক ও ২৫১ জনকে সদস্য করা হয়।
গত ২ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিস্তৃতি শুরু হয়। এখন পর্যন্ত দেশের ১৭টি জেলা, ৩টি মহানগর, ১টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আহ্বায়ক কমিটি করেছে তারা। কমিটিতে থাকছেন শুধু শিক্ষার্থীরা। একেক জেলায় কমিটির আকার একেক রকম।
জাতীয় নাগরিক কমিটি
এদিকে দেশের ১১টি থানা–উপজেলায় প্রতিনিধি কমিটি করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর ঢাকার সবুজবাগ থানায় ৪৬ সদস্যের, শ্যামপুর থানায় ১১৯ সদস্যের, ২২ ডিসেম্বর নওগাঁর মহাদেবপুর থানায় ৭০ সদস্যের, রাজশাহীর পবা থানায় ৬১ সদস্যের, একই জেলার মতিহার থানায় ৬৬ সদস্যের, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় ৫১ সদস্যের, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানায় ১২৩ সদস্যের, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৯ সদস্যের, ২৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালী থানায় ৩১৫ সদস্যের, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ৮১ সদস্যের ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ১৩২ সদস্যের প্রতিনিধি কমিটি করা হয়েছে।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের ১০০টি থানা ও উপজেলায় প্রতিনিধি কমিটি গঠন করল জাতীয় নাগরিক কমিটি। এর মধ্যে ঢাকার থানা–উপজেলায় ২৬টি আর বাকি ৭৪টি কমিটি ঢাকার বাইরের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গণ–অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ৮ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে থানা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি কমিটি করছে সংগঠনটি।