৬ জেলায় তীব্র শীত, অন্য এলাকাতেও বাড়তে পারে
ভোরে গ্রামের পথঘাট এখন কুয়াশায় মোড়ানো থাকে। মূলত সন্ধ্যার পর থেকেই বাড়তে থাকে কুয়াশার দাপট। এর সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস গ্রামগঞ্জে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। গত দুই দিন রাজধানীর বাইরে দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে ভোরে ও রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে ছয়টি জেলায় শীতের অনুভূতি বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যে কারণে এই ছয় জেলায় শীতের তীব্রতা অন্য এলাকার চেয়ে বেশি।
কোনো অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। গতকাল রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তিনটি স্থানে—রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী ও নওগাঁর বদলগাছীতে। প্রতিটি এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটেও। সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের নিকলী এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, মৌলভীবাজার, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলায়। এসব অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল। আর ১২ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তাপমাত্রা। এর মধ্যে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চলতি জানুয়ারি মাসের বাকি সময় দেশের কোনো না কোনো এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ থাকবে। হয়তো কোনো অঞ্চলে নতুন করে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেবে, আবার কোনো অঞ্চল থেকে শৈত্যপ্রবাহ সরে যাবে—এভাবেই চলবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আজ সোমবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। ফলে রাতে শীতের অনুভূতি বেশি হবে। এ ছাড়া আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। কোনো অঞ্চলে ঘন কুয়াশা থাকলে সূর্যের তাপ কমে সেখানে শীতের অনুভূতি বেড়ে যায় বলে জানান আবহাওয়াবিদেরা।
তীব্র শীতের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হচ্ছে। গতকাল জয়পুরহাট জেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। আজও এই জেলার বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান হবে না। জয়পুরহাটের মতোই রাজশাহী জেলার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও গতকাল বন্ধ ছিল।