কেরানীগঞ্জে আবাসনের হিড়িক, একটিরও অনুমোদন নেই
বেলা গড়িয়েছে। রোদের খরতাপ খানিকটা মোলায়েম। কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের নিমতলা সড়ক মোড়ে শওকত আলীর টিনের চালার চা দোকানে সামনের পাতা বেঞ্চে এসে বসেছেন পাড়ার কর্মহীন প্রৌঢ় কয়েকজন। চায়ের তেষ্টা মেটানোর চেয়ে প্রধান উদ্দেশ্য সময় কাটানো। হালকা একটু বাতাস দিচ্ছে। গল্পগাছা চলছে নানা বিষয়ে।
দোকানের পেছনে দিগন্তবিস্তৃত নিচু জমি। অধিকাংশই বর্ষার মৌসুমি বৃষ্টিতে তলিয়ে আছে। কোথাও কোথাও একটু উঁচু ভিটা মাথা উঁচিয়ে আছে চরের মতো। সেসব জায়গায় ঊর্ধ্ববাহু হয়ে দণ্ডায়মান বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা অনেকগুলো সাইনবোর্ড। কোথাও কোথাও বালু ভরাটের জন্য ড্রেজিংয়ের লোহার মোটা পাইপ টেনে আনা হয়েছে দূরের কোনো স্থান থেকে। তবে বালু ফেলা বন্ধ। এ নিয়েই মন খারাপ চা–দোকানি শওকত আলীর।
শওকত আলী জানালেন, চা দোকানের পেছনের বিশাল মাঠটিতে তাঁদের বেশ কিছু পৈতৃক জমি রয়েছে। তার মধ্য থেকে ৮৭ শতাংশ জমি তাঁরা অংশীদারত্বের ভিত্তিতে চুক্তি করে দিয়েছেন সাফা হাউজিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। প্রতিষ্ঠানটি জমি ভরাট করে আবাসন গড়ে তুলবে। প্লট হলে ৩৫ শতাংশ তাঁরা পাবেন। আর হস্তান্তরের আগপর্যন্ত প্রতি মাসে তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা।
মাস ছয়েক টাকা দেওয়ার পর টাকা দেওয়া বন্ধ, ওদিকে প্রকল্পের কাজও চলছে না। ফলে বেশ সমস্যাতেই আছে তাঁর পরিবার। উপস্থিত লোকজন জানালেন, আবাসন প্রকল্প চালু হওয়ায় জমির দাম দিন দিন কেবলই বাড়ছে। প্রতি কাঠা ১০-১২ লাখ টাকা, সড়কের কাছাকাছি হলে আরও বেশি।
কেরানীগঞ্জে ঘুরে দেখা গেল, পুরো উপজেলায় নিচু জমি ভরাট করে আবাসন আর হাউজিং প্রকল্পের হিড়িক পড়ে গেছে। তারানগরের নিমতলার মতো ড্রেজিং করে নিচু জমিতে বালু ফেলে ভরাট করে প্লট তৈরির কাজ চলছে। মাঠের পর মাঠে শত শত সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে অসংখ্য আবাসন।
নকশা অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হচ্ছে একের পর এক হাউজিং প্রকল্পের বহুতল ভবন, ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চরকালীগঞ্জ, খেজুরবাগ, হাসনাবাদ, পূর্ব আগানগর, শুভাঢ্যাসহ অনেক এলাকায় এমনভাবে বহুতল বাড়ি তৈরি হচ্ছে যে চলাচলের রাস্তা পুরান ঢাকার সরু গলির মতো হয়ে গেছে। ঘিঞ্জি হয়ে পড়ছে এসব মহল্লা। কেরানীগঞ্জ হয়ে উঠছে এক অপরিকল্পিত আবাসিক এলাকা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর–পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন প্রথম আলোকে বলেছেন, ঢাকার ওপর চাপ কমাতে কেরানীগঞ্জে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরীর পূর্ব পাশ দিয়ে ছোট–বড়–মাঝারি এত অনিয়ন্ত্রিত আবাস হয়েছে যে পরিস্থিতি এখন মারাত্মক হয়ে উঠেছে। এই অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ প্রতিরোধ করতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জোরালো ভূমিকা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বল্গাহীনভাবে আর এ ধরনের কোনো প্রকল্প হতে দেওয়া হবে না। রাজউক রাশ টেনে ধরবে।
৯ ইউনিয়নে ৮০টি আবাসন প্রকল্প
কেরানীগঞ্জে ১২টি ইউনিয়ন—হযরতপুর, কলাতিয়া, তারানগর, রোহিতপুর, শাক্তা, কালিন্দী, বাস্তা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, জিনজিরা, কোন্ডা ও আগানগর। পুরো উপজেলা ঘুরে দেখা গেল, শুধু হযরতপুর, জিনজিরা ও আগানগরে কোনো আবাসন প্রকল্প নেই। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের অনুমান, অন্য ৯টি ইউনিয়নে ছোট–বড় প্রায় ৮০টির মতো আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে।
সবচেয়ে বেশি আবাসন প্রকল্প হয়েছে তারানগর ইউনিয়নে, প্রায় ৪৫টি। রাজধানীর বছিলা সেতু (শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু) নির্মাণের পর তারানগরের ঝাউলার মোড় থেকে বছিলা দিয়ে বেড়িবাঁধের তিন রাস্তার মোড় হয়ে ধানমন্ডি পর্যন্ত গাড়িতে আসতে আধা ঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিটের মতো লাগে। যোগাযোগের এই সুবিধার কারণে তারানগরের ওপর আবাসন প্রকল্প মালিকদের দৃষ্টি পড়েছে বেশি। ঘুরে দেখা গেল, ঝাউলার চৌরাস্তার মোড় থেকে ঘাটারচর সড়কের দুই পাশে একের পর এক আবাসনের সাইনবোর্ড।
মিলিনিয়াম সিটি, মধুসিটি, ম্যাক্স ওয়েল হাউজিং ইত্যাদি। তারানগরের কাঁঠালতলী সেতুর ওপর দাঁড়ালে দুই পাশে বিস্ময়কর দৃশ্য। মাইলের পর মাইলজুড়ে মাঠের ওপর ইকো সিটি, নিশান বাড়ি, বিএস গ্রুপ, সোপান দক্ষিণা সিটিসহ বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির শত শত সাইনবোর্ড। কোনো কোনো আবাসনে বালু ভরাট চলছে। কোনোটিতে মাটি সমান করে পথ ও প্লট তৈরির কাজ চলছে।
সিরাজনগর ও বেউতা এই দুই গ্রাম মিলে বিশাল এলাকাজুড়ে ‘মুক্তধারা’ নামের একটি আবাসনের সাইনবোর্ড। অনেক আবাসনের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে প্রকল্প কার্যালয়। অনেক আবাসনে বাহারি গাছপালা লাগিয়ে বাগানবাড়ির আদলে করা হয়েছে সুদৃশ্য রেস্তোরাঁ। তারানগরের ঘাটারচর সড়কে মধুসিটির আবাসন প্রকল্পের কার্যালয়ের ভবনটি রীতিমতো প্রাসাদতুল্য।
সেখানে কথা হলো প্রতিষ্ঠানের হেড অব অপারেশন হাসান মাহমুদের সঙ্গে। ২০০৯ সাল থেকে তাঁদের প্রকল্প শুরু। এখন প্রায় ৭০ একরজুড়ে চলছে আবাসন প্রকল্প। তিনি বললেন, তাঁরা ‘ভূমি ব্যবহার আইন’ মেনেই আবাসন প্রকল্প করেছেন। ইতিমধ্যেই ৩, ৫ ও ১০ কাঠার তিন শতাধিক প্লট বিক্রি হয়েছে।
‘স্বপ্ন নিবাস’ নামের একটি প্রকল্প সবে শুরু হয়েছে। বেউতা এলাকায় বেশ কিছু নিচু জমিতে তাদের সাইনবোর্ড লাগাতে দেখা গেল। এই প্রকল্পের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহসীন মন্টু জানালেন, মাত্র দুই–তিন মাস হলো প্রকল্পটি শুরু হয়েছে। আপাতত ৩ ও ৫ কাঠার প্লট তৈরি করছেন তাঁরা।
আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অধিকাংশ নতুন আবাসন প্রতিষ্ঠান অল্প কিছু জমি কিনে প্রকল্প শুরু করে। এরপর তারা আশপাশের এলাকার জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে বা অংশীদারত্বের চুক্তি করে সাইনবোর্ড বসিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিশাল আবাসন এলাকা দেখানোর চেষ্টা করছে।
কলাতিয়া ইউনিয়নের রনজিতপুর সড়কে ঢাকা মডার্ন সিটি শুরু হয়েছে ২০১০ সালে। ব্যবস্থাপক শাহিনুল ইসলাম জানান, এখানে প্রায় দুই হাজার প্লট তৈরির কাজ চলছে। প্রকল্পের ভেতরে দুটি ৬০ ফুট এবং বেশ কিছু ৪০ ও ২৫ ফুট সড়ক তৈরি করা হয়েছে। নিজেদের গাড়ি করে ক্রেতাদের প্রকল্পের ভেতরে ঘুরে দেখানোর ব্যবস্থা আছে। বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৫০টি প্লট। এ প্রকল্পের অনুমোদন আছে দাবি করা হলেও কে অনুমোদন দিল, তা স্পষ্ট করে বলতে পারলেন না ব্যবস্থাপক।
তারানগর ইউনিয়নজুড়ে অনুমোদন ছাড়াই ডজন ডজন আবাসন গড়ে উঠছে, সে প্রসঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক বললেন, ‘আইন অমান্য হলে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করার ক্ষমতা ইউপি চেয়ারম্যানের আছে। তবে এসব আবাসনের অনুমোদন দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই, বাধা দেওয়ারও ক্ষমতা নেই। কেউ আইন মানে না, আইন মানানোর ব্যবস্থাও নেই।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানালেন, ২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ থেকে বাড়ির নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তারপর নিষেধাজ্ঞা আসে। নকশা বা আবাসনের অনুমোদন নিতে হবে রাজউক থেকে। কিন্তু রাজউক নকশার অনুমোদন দিচ্ছে না।
রাজধানীর বেশ কাছে হলেও কেরানীগঞ্জ উপজেলার পরিবেশ না শহর, না গ্রাম। বরং প্রকৃতি অনেকটাই গ্রামীণ। জিনজিরা, আটিবাজার, শুভাঢ্যাসহ কিছু এলাকা বাদে অন্য ইউনিয়নগুলোর জমি নিচু। পুকুর, খাল ও জলাশয় অনেক। মাঝে মাঝে উঁচু জায়গায় বসতবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া চারপাশে সবুজের সন্নিবেশ। তার ভেতর পিচঢালা পথ। দক্ষিণ পাশ দিয়ে মাওয়া পর্যন্ত চলে গেছে পদ্মা সেতুর নতুন মহাসড়ক।
আর উত্তরে বছিলা থেকে তারানগর পর্যন্ত নতুন ঘাটারচর সড়ক। মাঝে জিনজিরা থেকে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু (বাবুবাজার সেতু) হয়ে পুরান ঢাকার নয়াবাজার সড়ক। এই ত্রিমুখী যোগাযোগব্যবস্থার ফলে ঘরবাড়ি তৈরির জন্য অধুনা কেরানীগঞ্জের প্রতি লোকের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে গড়ে উঠছে বিপুল আবাসন প্রকল্প।
তারানগরের পরেই বেশি আবাসন গড়ে উঠেছে তেঘরিয়া ইউনিয়নের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে। রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পটি এখানেই। বেসরকারি অন্যান্য আবাসনের মধ্যে আছে প্রিয়প্রাঙ্গণ, সাউথ টাউন, বেয়ারা হাউজিং, কিউট হোমস, মুজাহিদ নগর, সবুজ ছায়া, জমিদার সিটি, প্রত্যয় সিটি, স্টার প্লাস ফিউচার সিটি ও সুমনা হাউজিং প্রভৃতি।
শুভাঢ্যা ইউনিয়নেও প্রচুর বহুতল ভবন হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হাসনাবাদ হাউজিং। আবাসনের মধ্যে রয়েছে ইকবাল নগর। কোন্ডা ইউনিয়নে বসুন্ধরা রিভারভিউ নামের বিশাল হাউজিং প্রকল্প। আরও আছে অ্যাপোলো হাউজিং। আবাসনের মধ্যে কিংডম সিটি, নিউ ভিশন সিটি, আকবরনগর, মনপুরা আবাসিক প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে বাস্তা ইউনিয়নে আছে সানওয়ে রিভার সিটির আপন নিবাস, সবুজ ছায়া, দড়িগাঁও গোল্ডেন সিটি, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বসতভিটা ও রিমঝিম উপশহর।
আবাসন প্রকল্পের সঠিক হিসাব পাওয়া দুষ্কর। কেরানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল রনি জানালেন, আবাসনের হিসাব তাঁদের কাছে নেই। কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে জমি বিক্রি করলে তাঁরা নামজারি করে দেন। জমির শ্রেণি পরিবর্তন বা প্রকল্পের অনুমোদন করার এখতিয়ার তাঁদের নেই। কোনো অনিয়ম হলে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু এমন কোনো অভিযোগ আসেনি।
এখনো কোনো প্রকল্পের অনুমোদন নেই
কেরানীগঞ্জ রাজউকের আওতায় এসেছে ১৯৯৫ সালে। রাজউকের অঞ্চল-৭–এর অন্তর্ভুক্ত কেরানীগঞ্জ। বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর তিন জেলা মিলিয়ে রাজউকের মাস্টারপ্ল্যানের ভূমির পরিমাণ ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের একজন কর্মকর্তা বললেন, কেরানীগঞ্জ বন্যাপ্রবণ এলাকা। জলাধার ও কৃষিজমির পরিমাণ বেশি বলে আবাসন বা ঘরবাড়ি তৈরির সুযোগ কম। তবে নতুন ড্যাপে জমির শ্রেণির পরিবর্তন করে আবাসনের সুযোগ বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নতুন ড্যাপ (ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান) সম্পর্কে জানতে এর প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের কোনো আবাসনের রাজউকের অনুমোদন নেই।
এটা বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে দ্বীপের মতো এলাকা। নতুন ড্যাপে পানিপ্রবাহ এলাকা, জলাধার, কৃষিজমি এসব চিহ্নিত করে কিছু এলাকায় ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে আবাসন করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
যারা ইতিমধ্যেই নিয়ম মেনে আবাসন বা ভবন নির্মাণ করেছে, তাদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের ফি দিয়ে প্রকল্প বা নকশা অনুমোদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। যারা আইনের সামান্য ব্যত্যয় করেছে, তাদের আইন অনুসারে জরিমানা করে অনুমোদন দেওয়া হবে। আরা যারা গুরুতর লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন ড্যাপের অনুমোদন হয়ে গেছে। শিগগিরই তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। নতুন ড্যাপ অনুসারে কেরানীগঞ্জকে একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চায় রাজউক।
এটি ঢাকা–মাওয়া সড়ক ধরে মাওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে বলে জানালেন রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগে যা হয়েছে, তা আইনের আওতায় আনা হবে। আর এখন থেকে অনুমোদন ব্যতিরেকে কোনো আবাসন বা ভবন নির্মাণ হতে দেওয়া হবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেরানীগঞ্জে রাজউকের কোনো আঞ্চলিক কার্যালয় আপাতত করার পরিকল্পনা নেই।
ফসলি জমির পরিমাণ কমছে
আবাসন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশই শুধু বদলে যাচ্ছে না, এলাকার ফসলি জমির পরিমাণও দ্রুত কমছে। এখানে উঁচু জমিগুলোতে ভালো সবজির ফলন হয়। আর নিচু জমিতে হয় বোরো ধান ও শর্ষের আবাদ। ২০০০ সালে উপজেলায় কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৫৪০ হেক্টর।
এখন আছে ৮ হাজার ৩৫০ হেক্টর। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল আমীন বললেন, তাঁরা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা দিতে পারেন। কিন্তু জমি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করার নেই। যেভাবে দ্রুত আবাসন হচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে কেরানীগঞ্জে হয়তো আবাদি জমিই খুব একটা থাকবে না। চাষাবাদ কমে গেলে তখন হয়তো লোকে শুধু ছাদবাগানই করবেন।