বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
প্রদর্শনে ঘাটতি, গবেষণা অপ্রতুল, সংরক্ষণ দুর্বল
১৯১৩ সালে মাত্র ৩৭৯টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা জাদুঘরের। ১৯৮৩ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ঢাকা জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর রাখা হয়। শাহবাগে শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানের মূল ভবনের সংগ্রহে নিদর্শনের সংখ্যা এখন ৯৩ হাজারের কিছু বেশি; কিন্তু জাদুঘরে সেসব প্রদর্শনের স্থান পর্যাপ্ত নয়। সংগ্রহের মাত্র ৪ শতাংশ এখন প্রদর্শিত হয়।
রাজধানীর শাহবাগের বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শ দর্শনার্থী আসেন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রচুর। জাদুঘরের প্রধান সংগ্রহের মধ্যে আছে ঐতিহাসিক ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বহু নিদর্শন। অভিলক্ষ্য সেসবের সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণা জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য। বছরজুড়ে নানা প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়াও তাদের আছে কথ্য ইতিহাস সংরক্ষণের একটি বিস্তৃত প্রকল্প।
১৯১৩ সালে মাত্র ৩৭৯টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা জাদুঘরের। ১৯৮৩ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ঢাকা জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর রাখা হয়। শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের মূল ভবনটি ছাড়াও এর আরও কিছু শাখা জাদুঘর আছে। সেগুলো হচ্ছে আহসান মঞ্জিল, ওসমানী জাদুঘর, জিয়া স্মৃতি জাদুঘর, পল্লিকবি জসীমউদ্দীন জাদুঘর, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, সাংবাদিক কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর ও স্বাধীনতা জাদুঘর।
শাহবাগে শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানের মূল ভবনের সংগ্রহে নিদর্শনের সংখ্যা এখন ৯৩ হাজার ২৪৬; কিন্তু জাদুঘরে সেসব প্রদর্শনের স্থান পর্যাপ্ত নয়। সংগ্রহের মাত্র ৪ শতাংশ এখন প্রদর্শিত হয়। এর গবেষণাও অপ্রতুল। গবেষণার দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছে জাদুঘরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও। ফলে চোখে দেখার আপাত তৃপ্তির বাইরে বিপুল নিদর্শন অপ্রদর্শিত থেকে যায়। পর্যাপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার অভাবে দেশকে জানা–বোঝার বিষয়টিও অপূর্ণ থাকে।
জাতীয় জাদুঘরের দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের কাছ থেকে নিদর্শনের সঙ্গে পরিবেশিত তথ্যে অপ্রতুলতার অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এর সংরক্ষণকক্ষে থাকা অমূল্য প্রাচীন নিদর্শনগুলোর সুরক্ষা নিয়ে।
জাতীয় জাদুঘরের পূর্বাপর জানতে প্রথম আলো কথা বলেছে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক, পরিচালনা পর্ষদ, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও কয়েকজন দর্শনার্থীর সঙ্গে। তাঁদের কথায় উঠে এসেছে এই প্রতিষ্ঠানের আশু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব।
বহু দর্শনার্থী, বহু নিদর্শন
জাতীয় জাদুঘরের ১ নম্বর গ্যালারির বিশাল মানচিত্রের দিকে শিশু–কিশোরদের আগ্রহ বেশি। বাংলাদেশের বিরাট মানচিত্রটিতে জেলা ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আলো জ্বালানো যায়। শিশুরা এসে সেই আলো দেখে দেখে তাদের গ্রামের বাড়ি খুঁজে বের করে। ঢাকার সঙ্গে তার দূরত্ব মাপে। সারা দেশের পটভূমিতে তাদের নিজেদের এলাকা বুঝে ওঠার চেষ্টা করে। ইতিহাস ও ধ্রুপদি শিল্পকলা, জাতিতত্ত্ব ও অলংকরণ, সমকালীন শিল্পকলা ও বিশ্বসভ্যতা বা প্রাকৃতিক ইতিহাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাঁচ হাজারের বেশি নিদর্শন জাদুঘরের ৪৫টি গ্যালারিতে সাজিয়ে রাখা। ইতিহাস ধরে রাখা এসব নিদর্শনও নানা কারণে আকর্ষণ করে দর্শকদের।
১৭ নম্বর গ্যালারিতে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত পাল ও সেন যুগের অনুপম ভাস্কর্য দেখে মুগ্ধ হন দর্শক। সেগুলোতে দর্শক বাংলার প্রাচীন পূর্বপুরুষদের জীবন ও মনের অন্বেষণ করেন। আবার ৪৪ নম্বর গ্যালারিতে বিশ্বসভ্যতার নিদর্শনে দৈত্যাকার মুখোশ তুলে ধরছে মানুষের বিস্ময়কর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়। সমকালীন শিল্পকলার গ্যালারিতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান, এস এম সুলতান বা কাইয়ুম চৌধুরীর আঁকা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মগ্ন হয়ে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের রূপ আবিষ্কার করেন দর্শনার্থীরা। এই বিভাগে আছে দেশের ২০ জনের বেশি বরেণ্য শিল্পীর আঁকা আড়াই হাজারের বেশি শিল্পকর্ম। সংগ্রহ শুরু হয়েছিল কাজী আবদুর রউফের আঁকা ‘পুঁথিপাঠ’ শিরোনামের শিল্পকর্ম দিয়ে।
জাদুঘরের প্রদর্শনীতে আরও আছে হাতে লেখা পবিত্র কোরআন শরিফ। আছে তালপাতার পুঁথি বা মানুষ বিক্রি করার দলিলের মতো সামাজিক–সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। ৪০ নম্বর গ্যালারি ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম: বাঙালি, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে। সেখানে আছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নানা স্মারক ও আলোকচিত্র।
জাতীয় জাদুঘরের ৯৩ হাজার ২৪৬ নিবন্ধিত নিদর্শনের মধ্যে ৮৯ হাজারের বেশি সংগ্রহ সব সময় থেকে যায় সংরক্ষণাগারে, অপ্রদর্শিত অবস্থায়। এর পরেও জাদুঘরের তিনটি তলার সব নিদর্শন ভালোভাবে দেখার জন্য দুই বেলা লেগে যায়। পুরো জাদুঘর দেখতে হলে একজন দর্শনার্থীকে ঘুরতে হয় দুই লাখ বর্গফুটের বেশি পরিসর।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে জাদুঘর পরিদর্শন করেছে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। ২০২১-২২ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরে জাতীয় জাদুঘরে সাধারণ দর্শনার্থী এসেছেন ২ লাখ ২৯ হাজার। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বার্ষিক দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল এর তিন গুণ—সাত লাখের ওপরে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার পর থেকে দর্শনার্থী কম।
জাতীয় জাদুঘর নিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বিচিত্র। গত ৬ জুন দুপুরে একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘একেকটা নিদর্শনের সামনে দাঁড়ালে মনে হয়, ভিন্ন ভিন্ন সময় আর সভ্যতায় চলে যাচ্ছি।’
একই সময়ে রাজধানীর শুক্রাবাদ থেকে জাদুঘর দেখতে এসেছিলেন নাজমুল ইসলাম। দুই বছর আগে তিনি আরও একবার এসেছিলেন। অস্ত্রশস্ত্রের ২৩ নম্বর গ্যালারিতে পারস্য সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আব্বাসের ঢাল আর শিরস্ত্রাণ দেখছিলেন তিনি। বললেন, ‘জাদুঘর এমনিতে আগের চেয়ে পরিচ্ছন্ন হয়েছে। আলোও বেড়েছে। কিন্তু দুই বছর পরে এসে সংগ্রহে নতুন কিছুই দেখতে পেলাম না। নিদর্শনগুলোর পাশে দেওয়া আছে কেবল সংগ্রহটির নাম আর প্রাপ্তিস্থানের তথ্য। এর বাইরে বিস্তারিত কোনো তথ্য তখনো ছিল না, এখনো নেই।’
একই ধরনের অভিযোগ করলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা হামিদ শিকদার। চতুর্থ তলায় বিশ্বসভ্যতার গ্যালারিতে ছেলে আদিবকে তিনি বালিঘড়ির ব্যবহার বোঝাচ্ছিলেন। হামিদ শিকদার বললেন, ‘বালিঘড়িটা যে কোথা থেকে পাওয়া গেল, সেটিই বুঝতে পারছি না।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, আরেকটা গ্যালারিতে নানা সময়ের ও রাজত্বের মুদ্রা প্রদর্শন করা হয়েছে; কিন্তু যথাযথ বিন্যাস, সময়কালের ধারাবাহিকতা এবং তথ্যের অভাবের কারণে কোনোকিছু বোধগম্য হচ্ছে না। অন্যান্য গ্যালারিতেও এ রকম এলোমেলোভাবে নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে। তিনি সুষ্ঠু বিন্যাস আর প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য কর্তৃপক্ষকে আরও নজর দেওয়ার পরামর্শ দিলেন।
ব্যবস্থাপনার ত্রুটি
জাদুঘরের নিদর্শন পর্যাপ্ত জায়গা নিয়ে সাজানো হয়েছে; কিন্তু অনেক গ্যালারিতেই প্রদর্শিত সামগ্রীর সঙ্গে নিদর্শনের বর্ণনা অনুপস্থিত। ডিজিটাল কম্পোনেন্ট বা প্রযুক্তিগত সহায়িকা ব্যবহার করে তথ্য পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে বারবার চেষ্টা করেও সেগুলো সচল পাওয়া গেল না।
গ্যালারির পর গ্যালারিতেও বিষয়ের ধারাবাহিকতার অভাব প্রকট। যেমন ২ নম্বর গ্যালারি বাংলাদেশের গ্রামজীবন নিয়ে। এরপর অন্যান্য বিষয়ে ৮টি গ্যালারির পর ১১ নম্বরে গিয়ে আবার বাংলাদেশের জনজীবন। যেমন ১০ নম্বর গ্যালারি হাতি নিয়ে; কিন্তু ১১ নম্বরে বাংলাদেশের জনজীবন। আবার ২২ নম্বর গ্যালারিতে গিয়ে পাওয়া যাচ্ছে হাতির দাঁতের শিল্পকর্ম।
বিভিন্ন জাদুঘরের সঙ্গে মিলে গুরুত্বপূর্ণ যৌথ প্রদর্শনী আয়োজন করার দায়িত্ব জাতীয় জাদুঘরের; কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তা হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্থান সংকট ও যৌথ প্রদর্শনীতে নিদর্শনের সুরক্ষার ঝুঁকির কারণে তা হচ্ছে না। তবে প্রতিষ্ঠানের গবেষণার দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন তিনিও।
গবেষণা ও পাঠাগারের পরিস্থিতি
শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর একুশে পদক পেয়েছে জাতীয় জাদুঘর। জাদুঘরের কয়েকটি গ্যালারি ডিজিটাইজ করায় দর্শক চাইলে এখন ঘরে বসে দেখতে পারেন জাদুঘরের গ্যালারি। কিন্তু গবেষণা নেই বলে নিদর্শন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দর্শকেরা পান না। জাদুঘরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা বাইরে থেকে গবেষকদের সহায়তা নেন না।
জাতীয় সংসদে পাস হওয়া জাদুঘর আইনের কার্যাবলিতে গবেষণার কথা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্চতর গবেষণায় দক্ষ কয়েকজন ফ্যাকাল্টি সদস্য আছেন। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়। বছরে আমাদের ছয়টি গবেষণামূলক বই প্রকাশের কোটা রয়েছে। সেটি পূরণ করা হয়। তবে বলতে দ্বিধা নেই, গবেষণার কাজ আরও বেশি হওয়া দরকার।’ তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০–২২ এই দুই অর্থবছরে জাতীয় জাদুঘরের নিজস্ব প্রকাশনা থেকে গবেষণার অংশ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে মাত্র একটি বই ও জার্নালের একটি সংখ্যা। ইংরেজিতে লেখা বৃহদায়তন এই বর্ণনামূলক বইটি ভারতবর্ষের স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে।
জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় দুই শ। বিক্রয়কেন্দ্রে খবর নিয়ে জানা গেল, পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৮টি বই।
জাতীয় জাদুঘরের পাঠাগার বেশ সমৃদ্ধ। বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। অনুমতিসাপেক্ষে গবেষকদের ব্যবহারের জন্য সেটি উন্মুক্ত। তবে গবেষক আসেন খুবই কম। গত জুন মাসে একাধিক দিন গিয়েও পাঠাগারে কাউকে দেখা যায়নি। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই গ্রন্থাগারের সেবা নিয়েছেন মাত্র ১৫৫ জন।
শঙ্কা আছে সংরক্ষণ নিয়ে
জাদুঘরের মোট ১৮টি গুদামে সংরক্ষিত আছে প্রায় ৮৯ হাজার নিদর্শন। এর মধ্যে ৭১ হাজারের বেশি ইতিহাস ও ধ্রুপদি শিল্পকলা বিভাগের। সেসব সংগ্রহ সংরক্ষণ করা হয়েছে ছয়টি গুদামে। সংগ্রহের তালিকা তৈরি করা থাকলেও তা সংগ্রহ করা যায়নি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ তালিকা বাইরে প্রকাশের নিয়ম নেই।
এসব বিষয়ে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘গুদামগুলো ৪০ বছরের পুরোনো। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় সেগুলো তৈরি করা হয়নি। কিপাররা (সংরক্ষক) আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে চেষ্টা করছেন। তাতে যে অবশ্য খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে, তা বলব না। সামনে নতুন ভবন হলে সংরক্ষণের ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। প্রদর্শনীর জায়গাও বাড়বে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন জাতীয় জাদুঘরের বর্তমান পর্ষদের একজন সদস্য। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জাদুঘরের সংগ্রহের বড় একটি অংশ ডিজিটাইজ করা হয়েছে। তবে প্রদর্শনী ও সংরক্ষণের জন্য আরও জায়গা প্রয়োজন। তহবিল–সংকট তো আছেই। একটু একটু করে উত্তরণের চেষ্টা চলছে। কিছু বিষয়ে আধুনিকায়ন জরুরি।
সব বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদের (আইকম) বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় জাদুঘর থেকে অনেক রকমের প্রকাশনাই বের হয়। তবে সত্যিকারের গবেষণার ঘাটতি আছে। জাদুঘরের অধিকাংশ নিদর্শনই প্রত্নবস্তু; অথচ জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডে কি কোনো জাদুঘরবিশেষজ্ঞ বা প্রত্নতাত্ত্বিক আছেন? এতেই বোঝা যায় ব্যবস্থাপনাসহ সবকিছুর ঘাটতির উৎস কোথায়। এর দায় তো সরকারেরই। জাদুঘরের কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে থেকে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিতে হবে। গবেষক তৈরি করতে হবে। ভালো গবেষণা ছাড়া কোনো জাদুঘর বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারে না।