সঞ্চয় এখন সবচেয়ে সহজ ‘বিকাশ’-এ

বিকাশ অ্যাপ থেকেই চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় করা যায়
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গাজীপুরের চাকরিজীবী রুবেল মিয়ার দুজনের সংসার। স্বল্প আয়ে ভালোই চলে যায় তাঁদের জীবন। নিজের এই আয় থেকে কিছু সঞ্চয়ের ইচ্ছা সব সময়ই কাজ করত। বিকাশ-এর মাধ্যমে ডিপিএস রুবেলের এই ভাবনাকে বাস্তব করে তুলেছে। বছর দু-এক আগে সাহস করে নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে খুলে ফেললেন মাসিক ডিপিএস। ডিপিএসের মেয়াদপূর্তি হওয়ার পর একসঙ্গে অনেকগুলো টাকা পেয়ে বাড়ি মেরামতের কাজে লাগান তিনি। জরুরি সময়ে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছিল বিকাশ-এর মাধ্যমে জমানো টাকা।

রুবেল মিয়ার ভাষায়, ‘আমি যখন সাহস করে বিকাশ অ্যাপে ডিপিএস খুলি, তখন ভেবেছিলাম কোনো না কোনো প্রয়োজনে কাজে লাগবে। যখন মুনাফাসহ পুরো টাকা হাতে পেলাম, তখন বাড়ির টিনের চাল ও দেয়াল মেরামতের কাজে লাগালাম। দিন শেষে এই একচালা বাসাটাই তো আমার পরিবারের ঠাঁই, আমাদের ভালোবাসা।’

রুবেলের মতো এমন গ্রাহকেরা বিকাশ-এর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ৩৩ লাখ ডিপিএস খুলেছেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিকাশ-এর মাধ্যমে সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তিতে এসব ডিপিএস খুলেছেন তাঁরা। ভবিষ্যতের নিরাপত্তা, চিকিৎসা, ব্যবসায়িক মূলধন সংগ্রহ, গৃহস্থালি ও ইলেকট্রনিকস পণ্য কেনা, ভ্রমণ, পড়াশোনার খরচ, যানবাহন কেনাসহ নানা প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় এসব ডিপিএস করেছেন বিকাশ গ্রাহকেরা। এমনকি দেনা বা ঋণ পরিশোধের জন্যও অনেকে ডিপিএসের মাধ্যমে সঞ্চয় করছেন।

ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের গুরুত্ব বুঝেই বহুকাল আগে থেকেই মানুষ মাটির ব্যাংক, বাঁশের ছিদ্র, চালের ড্রাম অথবা তোশকের নিচে অল্প অল্প করে টাকা জমাতেন। সেই সঞ্চয়ের ধারায় এখন এসেছে অনেক পরিবর্তন। মানুষ এখন ব্যাংকে না গিয়ে কাগজপত্রের ঝামেলা ছাড়াই বিকাশ অ্যাপ থেকেই খুলে ফেলতে পারছেন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কিম বা ডিপিএস।

বর্তমানে বিকাশ অ্যাপ থেকেই চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান—মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিএলসি ফাইন্যান্সে সঞ্চয় করা যায়। গতানুগতিক যেকোনো সঞ্চয় পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি সহজ ও নিরাপদ বলে স্বল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই পদ্ধতি। যেকোনো সময় একজন গ্রাহক তাঁর পছন্দমতো ব্যাংকে ডিপিএস খুলতে পারছেন নিমেষেই।

ঘরে বসে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করে মাত্র এক মিনিটেই বিকাশ অ্যাপ থেকে ডিপিএস খোলার সুবিধা গ্রাহকের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। সাপ্তাহিক বা মাসিক—দুই ধরনের কিস্তিতে গ্রাহকের ডিপিএস খোলার সুযোগ আছে। নির্দিষ্ট তারিখে কিস্তি জমার আগে বিকাশ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রাখার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয় অ্যাপ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে। নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা জমা হয়ে যায় বিকাশ অ্যাপ থেকেই।

সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত এবং ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছর মেয়াদে ডিপিএস খোলার সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে যাঁরা ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী সঞ্চয়ে আগ্রহী, তাঁরাও বিকাশ অ্যাপ থেকে সিটি ব্যাংক অথবা ঢাকা ব্যাংকের ইসলামিক ডিপিএস খুলতে পারেন।

জরুরি প্রয়োজনে ডিজিটাল ডিপিএসের টাকা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেও উঠিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে। যদিও মেয়াদপূর্তি করাই সঞ্চয়ের জন্য বেশি লাভজনক। মেয়াদপূর্তি হয়ে গেলে বিকাশ অ্যাপেই মুনাফাসহ মূল টাকা চলে আসে, যা ক্যাশ আউট করা যায় কোনো খরচ ছাড়াই।

এক মিনিটেই খুলুন ডিপিএস

ডিপিএস খুলতে বিকাশ অ্যাপের হোমস্ক্রিন থেকে ‘সেভিংস’ আইকনে ট্যাপ করে ‘নতুন সেভিংস খুলুন’-এ ক্লিক করতে হবে। সেভিংসের ধরন থেকে পছন্দ অনুযায়ী ‘সাধারণ সেভিংস’ অথবা ‘ইসলামিক সেভিংস’ বেছে নিয়ে সেভিংসের সময়কাল ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ চার বছর এবং জমার ধরন (মাসিক বা সাপ্তাহিক) নির্বাচন করতে হবে। এরপর প্রতি মাসে যে পরিমাণ টাকা জমাতে ইচ্ছুক, ন্যূনতম ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্বাচন করতে হবে। পরের ধাপে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের তালিকা থেকে পছন্দের প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে। এরপর জমার তথ্য ভালোভাবে দেখে নমিনি–সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। এরপর ডিপিএসের সারসংক্ষেপ দেখে নিয়ে এবং নিয়ম ও শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে, বুঝে সম্মতি দিয়ে সবশেষে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর টাইপের পর স্ক্রিনের নিচের অংশ ট্যাপ করে ধরে রাখলেই ডিপিএসের আবেদনটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। আবেদন সম্পন্ন হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকাশ ও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহক তাঁর মোবাইলে নিশ্চিতকরণ খুদে বার্তা (মেসেজ) পেয়ে যাবেন।