জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিছবি: বাসস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। জাতিসংঘের সদর দপ্তরে চলমান সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তাঁরা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশ নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে করতে পারে।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে আমি আনন্দিত। তাঁর সঙ্গে নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ এ সময় জ্বালানি ও ট্রানজিট সহযোগিতা, পর্যটন, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান নেপালের প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও কে পি শর্মা ওলির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তাঁরা ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন। প্রেস সচিব বলেন, নেপালের জলবিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত রয়েছে। তারা দু-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবিদ্যুৎ রপ্তানিতে সক্ষম হবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের মধ্যেও পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।

অনেক নেপালি শিক্ষার্থী প্রতিবছর বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে আসেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, দুই নেতা বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্ভবত নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর থ্রি জিরোস আইডিয়া (দারিদ্র্যমুক্ত, বেকারত্বমুক্ত ও কার্বন নিঃসরণমুক্ত বিশ্বের ধারণা) বিনিময় করেছেন।

ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সংস্থার (ইউএসএআইডি) প্রধান সামান্থা পাওয়ার, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার ফলকার টুর্ক, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিইও মার্ক সুজমানের সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি সামাজিক ব্যবসা, যুব ও প্রযুক্তিবিষয়ক জাতিসংঘের একটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন এবং মানবাধিকারবিষয়ক সুশীল সমাজের সংগঠনের (সিএসও) নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এ ছাড়া তিনি দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি আলোচনায় যোগ দেন। এটি নিউইয়র্ক টাইমসের স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।