চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ধাওয়া দিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তাঁর নাম নোয়াব আলী। তিনি উপজেলার বৈরাগ ইউপির চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ইউপি কার্যালয়ের কাছে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে ইউপি কার্যালয়ে যান চেয়ারম্যান নোয়াব আলী। তিনি প্রায় এক ঘণ্টা কার্যালয়ে অবস্থান করেন। পরে একটি সালিসি বৈঠকে যাওয়ার জন্য ইউপি কার্যালয় থেকে বের হন। কার্যালয়ের সামনে একটি অটোরিকশায় ওঠার সময় কয়েকজন ব্যক্তি এসে অতর্কিত তাঁকে মারধর শুরু করেন। তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পিছু নেন হামলাকারীরা। তাঁকে ধরে আবারও মারধর করা হয়। তাঁর পরনে থাকা পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে ফেলেন হামলাকারীরা। একপর্যায়ে দৌড়ে একটি ব্যাংকে আশ্রয় নেন চেয়ারম্যান।
হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে মারধর ও ধাওয়া দেওয়ার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ভিডিওতে ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়াও তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টায় থাকা এক ব্যক্তিকেও মারধর করতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাকে মারধর ও হেনস্তা করেছেন। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তবে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার হোসেন বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মী নন, স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা নোয়াব আলীর ওপর হামলা করেছে। নোয়াব আলী বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছেন, তাই তাঁর ওপর স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ।
এদিকে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। দুপুরে উপজেলা পরিষদের ভেতরে দলের নেতা-কর্মীরা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে একই দাবিতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বিএনপির নেতারা বলেন, ‘ডামি নির্বাচন’—এর মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাই উপজেলা চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যাতে কার্যালয়ে আসতে না পারেন, সে জন্য আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। পরে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে।’
আনোয়ারা উপজেলার পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদ ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ও আজ সকালে ঘেরাও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।