শুরু হলো এক মাসের প্রদর্শনী ‘ছাপাইচিত্রের পরম্পরা’
পঞ্চাশের দশক থেকে সমকালীন শিল্পীদের নির্বাচিত শিল্পকর্ম নিয়ে বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হয়েছে ‘ছাপাইচিত্রের পরম্পরা’ প্রদর্শনী। ঐতিহাসিক ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরম্পরা ও নিরীক্ষাপ্রবণতা তুলে ধরতে আয়োজন করা হয়েছে এ প্রদর্শনীর। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বেঙ্গল শিল্পালয়ে উদ্বোধন হয় প্রদর্শনীর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরেণ্য শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, ছাপচিত্রের কাজ একটা নেশার মতো। কত সস্তা উপকরণ দিয়েও যে ছাপচিত্র করা যায়, সেটা বাংলাদেশে দেখা যায়। যেমন উডকাটের কাজ। তিনি বলেন, প্রিন্ট মেকিং হচ্ছে শিল্পের এমন একটি মাধ্যম, যা মানুষের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করেছে। তবে দ্রুতগতিতে কাজে অনেক সময় শিল্পে দুর্বলতা থেকে যায় উল্লেখ করে শিল্পী মনিরুল ইসলাম তাঁদের সময়ে একটি শিল্প তৈরির সময় কতটা ধৈর্য নিয়ে শেষ করতে হতো, সে অভিজ্ঞতার কথা বললেন।
শিল্পী শহিদ কবির বলেন, বাংলাদেশে ছাপচিত্রের উপকরণ খুব কম। অনেক উপকরণ শিল্পীদের হাতে তৈরি করে নিতে হয়। তবু বাংলাদেশের ছাপচিত্র বিশ্বের কোনো দেশের চেয়ে কম নয়। সেই বক্তব্যেরই যেন সমর্থন করতে মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী বীরেন সোম বললেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম আয়োজিত একটি কর্মশালার কথা। একটি প্লেটে চারটি রং ব্যবহারের স্মৃতিচারণা করলেন তিনি।
এ দেশে প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পশিক্ষার পুরোধা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ, আনোয়ারুল হক, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী প্রমুখ ছাপচিত্রের মর্যাদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। পরবর্তীকালে দেশে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি-উদ্যোগে বহু ছাপচিত্র স্টুডিও গড়ে ওঠে, যেখানে নবীন শিল্পীরা তাঁদের চর্চা অব্যাহত রেখেছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। তিনি বলেন, পঞ্চাশের দশক থেকে ছাপচিত্রের যে একটি বিবর্তন এসেছে, তা রয়েছে এ প্রদর্শনীতে। এখানে ছোট ছোট কিছু ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে করণকৌশল।
‘ছাপাইচিত্রের পরম্পরা’ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে শিল্পী কামরুল হাসান, কাইয়ুম চৌধুরী, হামিদুজ্জামান খান, কালিদাস কর্মকার থেকে শুরু করে সমকালীন শিল্পীদের হাতে তৈরি অনেক কাজ। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। রোববার বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের বন্ধের দিন ছাড়া প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত।