টার্মিনাল বন্ধের কারণে ৩ দিন গ্যাস সরবরাহ আরও কমবে
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করা হয় দেশে। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য একটি টার্মিনাল আগামীকাল শুক্রবার থেকে টানা তিন দিন বন্ধ থাকবে। এতে গ্যাস-সংকট আরও কিছুটা বাড়তে পারে। এর আগে গত সপ্তাহেও একই টার্মিনাল টানা তিন দিন বন্ধ ছিল।
দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদনের পাশাপাশি এলএনজি আমদানি করে সারা দেশে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) তথ্য অনুযায়ী, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ করা হয় সর্বোচ্চ ২৮০ থেকে ৩০০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি সরবরাহ হয় ২৫ শতাংশ। কোনো কারণে এলএনজি সরবরাহ কমলে বেড়ে যায় গ্যাস-সংকট।
আজ বৃহস্পতিবার পেট্রোবাংলা থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময় অন্য টার্মিনাল থেকে দিনে ৫৫ থেকে ৫৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। গ্যাস সরবরাহ কমার কারণে দেশের কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপ বিরাজ করবে। সাময়িক অসুবিধার জন্য জনসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ। গ্যাস বিতরণ সংস্থা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসিও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
৮ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ প্রতিবেদন বলছে, দিনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে ২৭৬ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি থেকে এসেছে ৭৮ কোটি ঘনফুট। এ হিসাবে একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধে গ্যাসের সরবরাহ কমতে পারে ২২ কোটি ঘনফুটের বেশি। এতে শিল্প ও আবাসিক খাতের গ্রাহকের গ্যাস-সংকট আরও বাড়বে।
চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় নিয়মিত গ্যাস-সংকটে ভুগছেন বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও আবাসিক খাতের গ্রাহকেরা। এর মধ্যে শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় সরকার। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পেট্রোবাংলা। প্রতি ইউনিট ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। প্রস্তাবটি আমলে নিয়ে যাচাই-বাছাই শুরু করেছে বিইআরসি। এটি নিয়ে গণশুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।