বড়দিনে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা আর্চবিশপের
বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেছেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। ছাত্র-জনতা নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। দেশ গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও উন্নত একটা দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে—এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রাল চার্চের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ এ কথা বলেন। আগামী বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দেন তিনি। বড়দিনে প্রভু যিশুর আগমনে সবার জীবন নির্মল আনন্দ, অনাবিল সুখ ও শান্তিতে ভরে ওঠার কামনা করে সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান আর্চবিশপ।
আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেন, ‘এ বছর আমরা যখন বড়দিন উদ্যাপন করছি, তখন যিশুর জন্মস্থান পুণ্যভূমিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অনেক দেশ জড়িত হয়ে পড়েছে। শান্তিরাজ প্রভু যিশুখ্রিষ্টের আগমনে এ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।’
বিজয় এন ডি’ক্রুজ আরও বলেন, প্রভু যিশু ৩০ বছর বয়সে প্রকাশ্যে ধর্ম প্রচারের কাজ শুরু করেন। বাণী প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে তাঁর বাণী শোনার জন্য তাঁর চারপাশে ভিড় জমাতেন। তাঁর শিক্ষা ছিল, যাতে পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নয়। তিনি অবহেলিত, নির্যাতিত–নিপীড়িতদের পক্ষ অবলম্বন করেন।
এই ধর্মগুরু আরও বলেন, ক্যাথলিক চার্চ হলো মানবমুক্তি ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর, ভাষাভাষীর মানুষের মধ্যে বিশ্বে একতার দৃশ্যমান চিহ্ন। চার্চ সব মানবজাতির মধ্যে একটি সেতুবন্ধ স্থাপন করতে আগ্রহী। ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও একতার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করে। এই একতা স্থাপনের জন্য একসঙ্গে সবাইকে চলতে হবে।
বড়দিন উদ্যাপনের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেন, ‘ভয়ের কোনো কারণ নেই। সেনাবাহিনী নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা কাজ করছেন। বিশ্বাস করি, আনন্দের সঙ্গেই ভক্তিপূর্ণ অবস্থাতেই বড়দিন উদ্যাপন করতে পারব।’
খ্রিষ্টান কমিউনিকেশন সেন্টারের পরিচালক ফাদার বুলবুল আগস্টিন রিবেরু বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে আটটার দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামান কাকরাইল চার্চ পরিদর্শনে যাবেন। আর ২৫ তারিখ বুধবার বড়দিনের দিন বিকেলে দর্শনার্থীরা চার্চে যেতে পারবেন।
রাজধানীর সাতটি চার্চে আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ও পরদিন বুধবার সকালে প্রার্থনা অনুষ্ঠান চলবে। চার্চগুলো হচ্ছে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রাল, তেজগাঁও জপমালা রানির গির্জা, মোহাম্মদপুর সেন্ট খ্রিষ্টিনা চার্চ, মিরপুর ক্যাথলিক চার্চ, লক্ষ্মীবাজার পবিত্র ক্রুশের গির্জা, কাফরুল সেন্ট লরেন্স চার্চ এবং ভাটারা ক্যাথলিক চার্চ।