দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক অধিকার চর্চার সুযোগ কেমন, তা জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাগরিক সমাজ কাজের ক্ষেত্রের বিষয়েও জানতে চেয়েছে দেশটি। এ সময় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলার প্রসঙ্গও এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত) বাসায় রোববার সকালে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার এ বিষয়গুলো জানতে চান।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হেলেন লাফাবের বাসায় দুই ঘণ্টার ওই মতবিনিময়ে যোগ দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন, অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান, নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন হক ও সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল নানা বিষয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে প্রশ্ন রেখেছে। ওই বিষয়গুলোতে নাগরিক সমাজের মতামত কী, সেটা জানতে চেয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নাগরিক সমাজ কীভাবে দেখছে, সেটাও জানতে চায়। এ ছাড়া বিরোধী দল নির্বাচনের পর কোন অবস্থায় রয়েছে কিংবা বিরোধী দলের সক্ষমতার বিষয়টি আলোচনা এসেছে।
এই মুহূর্তে নাগরিক সমাজ কতটা স্বাধীনভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, কাজ করতে গিয়ে তারা কী ধরনের বাধার মুখে পড়ছে, সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি।
একটি সূত্র জানায়, নাগরিক সমাজের কর্মকাণ্ড বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের প্রসঙ্গ এসেছে। বিশেষ করে তাঁর বিরুদ্ধে শ্রম আইনে মামলাসহ তাঁকে ঘিরে যেসব তৎপরতা, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা জানতে চান।
নাগরিক সমাজের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সফররত প্রতিনিধিদলের মতবিনিময়ের পর ঢাকায় দেশটির দূতাবাস তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছে, ‘গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে নাগরিক সমাজ। আজ বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সাহসী ও প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে পেরে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত থাকব। সরকারকেও তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার আহ্বান জানাব।’