নভোএয়ারে ১০ বছরে ৫৫ লাখের বেশি যাত্রী পরিবহন
দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা নভোএয়ারের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ ৯ জানুয়ারি। ২০১৩ সালের এই দিনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল এ সংস্থা। গত ১০ বছরে ধারাবাহিকভাবে এক লাখের বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে নভোএয়ার। এ সময়ে সব মিলিয়ে সাড়ে ৫৫ লাখের বেশি যাত্রীকে সেবা দিয়েছে সংস্থাটি। ভবিষ্যতে যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা অব্যাহত রাখতে চায় সংস্থাটি।
নভোএয়ারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভোএয়ার দুটি বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। প্রথমত, যাত্রীদের নিরাপত্তা। দ্বিতীয়ত, উন্নত সেবার মাধ্যমে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করা। মূলত, এ কারণেই নভোএয়ার ১০ বছরে এতসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করতে পেরেছে।
শুরুতে নভোএয়ারের বহরে অত্যাধুনিক ৮৯ আসনের এমব্রেয়ার ১৪৫ মডেলের তিনটি উড়োজাহাজ ছিল। পর্যায়ক্রমে এমব্রেয়ার ১৪৫ মডেলের উড়োজাহাজগুলো বাদ দেওয়া হয়। এর মধ্যেই ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বহরে ৭২ আসনের এটিআর ৭২-৫০০ মডেলের ৭টি উড়োজাহাজ যুক্ত হয়। সব কটিই নভোএয়ারের নিজস্ব উড়োজাহাজ।
বর্তমানে এসব উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী এবং আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতায় ফ্লাইট পরিচালনা করে নভোএয়ার। এ ছাড়া যশোর থেকে কক্সবাজার ও রাজশাহী থেকে কক্সবাজার রুটে সরাসরি যাত্রী পরিবহন করছে এ সংস্থা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নভোএয়ারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন নতুন সেবা সংযোজনের মাধ্যমে যাত্রীসেবার মান উন্নত করতে নভোএয়ার সব সময় সচেষ্ট। সেই লক্ষ্যে যাত্রীদের বিশেষ সেবা দিতে দেশের প্রথম উড়োজাহাজ সংস্থা হিসেবে ২০১৩ সালে ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ার প্রোগ্রাম স্মাইলস, ২০১৬ সালে নভোএয়ার-ইবিএল কো-ব্র্যান্ডেড প্রিপেইড মাস্টারকার্ড, ২০১৮ সালে সহজে টিকিট ক্রয়ের জন্য মোবাইল অ্যাপ এবং চেকইন প্রক্রিয়া ঝামেলামুক্ত করতে ওয়েব চেকইন, ২০২০ সালে নভোএয়ার-এমটিবি কো-ব্র্যান্ডেড ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু করেছে, যা দেশের এভিয়েশন জগতে প্রথম।
নভোএয়ার ২০১৪ সালে বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষ থেকে বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইনস, ২০১৯ সালে বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইনস, ২০২১ সালে বেস্ট অনটাইম পারফরমেন্স এয়ারলাইনসের পুরস্কার জিতেছে।
গত ১০ বছরের যাত্রাপথ সহজ ও মসৃণ ছিল না নভোএয়ারের। নানান চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা জয় করে সংস্থাটি সবার কাছে বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য ও আস্থার এয়ারলাইনস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে নভোএয়ারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দক্ষ কর্মী ও আরও অত্যাধুনিক বহর নিয়ে এ সেক্টরে অবস্থান আরও সুদৃঢ় করাই তাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতেও যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে সাশ্রয়ীমূল্যে আকাশভ্রমণের সেবা প্রদানে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি নভোএয়ার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নানা ধরনের কার্যক্রমও পরিচালনা করে। ক্রিকেট, ফুটবল, গলফ, সার্ফিংসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা, বন্যাক্রান্তদের মধ্যে ওষুধ বিতরণ, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আকাশভ্রমণের সুযোগ দেওয়াসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংস্থাটি।
নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত ১০ বছরে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই যাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে নভোএয়ার। কিন্তু যাত্রীদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতকরণের কোনো সীমা নেই। তাই যাত্রীর আস্থা ধরে রাখতে সেবার মান ধরে রাখার পাশাপাশি আরও বাড়ানোর জন্য সব সময় কাজ করে যাচ্ছে নভোএয়ার।