দীপু মনির ৪ দিনের রিমান্ড, আরিফ খানের ৫ দিন
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুদিদোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার মামলায় তাঁদের রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এর আগে কড়া নিরাপত্তায় দীপু মনি ও আরিফ খান জয়কে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। তবে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করা হয়।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দীপু মনির ৪ দিন ও আরিফ খান জয় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
রাজধানীর বারিধারা থেকে গতকাল সোমবার রাতে দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে আরিফ খানকে গতকাল রাতে ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুদিদোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ১৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। ঢাকার সিএমএম আদালত অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। এ ছাড়া মামলার অজ্ঞাত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ‘আওয়ামী লীগ নেতারা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা’।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। কোনো প্রকার উসকানি ছাড়া আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করে আবু সায়েদকে হত্যা করে। মামলায় আরও বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমন করার জন্য ১ নম্বর আসামি শেখ হাসিনা ও ২ নম্বর আসামি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে পুলিশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বিকেলে মোহাম্মদপুরের বছিলার ৪০ ফুট এলাকায় হাজারো ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করেন। এই আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ নির্বিচার গুলি চালায়। তখন রাস্তা পার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় মুদিদোকানি আবু সায়েদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে স্থানীয় লোকজন আবু সায়েদের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়োয়া বামনহাট ইউনিয়নের নতুন বস্তি প্রধান হাট এলাকায় পাঠিয়ে দেন। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি দেশ ছাড়েন। এখন তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।