হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি বাংলাদেশে নতুন কোনো ভাইরাস নয়। দেশে এর উপস্থিতি আগেও ছিল, এখনো আছে। এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
অন্য যেকোনো জ্বর, সর্দি বা কাশির ক্ষেত্রে যে ধরনের সতর্কতা প্রয়োজন, এইচএমপিভিজনিত অসুস্থতার ক্ষেত্রে একই ধরনের সাবধানতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এইচএমপিভি ও এইচএমপিভিজনিত অসুস্থতা নিয়ে কথা হয় তাহমিনা শিরীনের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি প্রথম শনাক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুজনের শরীরে এটি শনাক্ত হয়। এই দুই ব্যক্তি কোন এলাকার ছিলেন তা উল্লেখ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
নতুন রোগ শনাক্ত করার ও রোগের ওপর নজরদারি করার বিশেষ ব্যবস্থা আইইডিসিআরের আছে। নিয়মিতভাবে তারা কাজটি করে। সেই কাজের অংশ হিসেবে আগে থেকেই এইচএমপিভি ভাইরাসের উপস্থিতি এই প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করেছে।
তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘গত বছর ভাইরাসে আক্রান্ত দুজন শনাক্ত হয়েছিল। এর অর্থ এই নয় যে দেশে মাত্র দুজন আক্রান্ত ছিল। আক্রান্ত হয়তো আরও ছিল। তাই আমি বলছি, এর উপস্থিতি আগে ছিল, এখনো আছে।’
এইচএমপিভি আক্রান্ত হলে, জ্বর, সর্দি ও কাশি হয়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, শরীরে ব্যথা হয়। এটি অন্য জ্বরের মতো। তবে শিশু, বয়স্ক ও বয়স্ক যেসব ব্যক্তি ক্যানসার বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি আছে।
অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিল্লির আঞ্চলিক কার্যালয় বা সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভাইরাসটি সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার ব্যাপারে কোনো বার্তা প্রচার করেনি।
সম্প্রতি চীনে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। ভারতেও আক্রান্তের খবর গণমাধ্যমে এসেছে। ভাইরাসটি নিয়ে এত কথা কেন হচ্ছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, সম্ভবত এটাই হচ্ছে ইনফোডেমিক। কিছু মানুষ না বুঝে আতঙ্কিত হচ্ছে, আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিছু মানুষ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।
হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অন্য ব্যক্তির ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সংক্রমণ থেকে দূরে থাকার উপায় হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। অর্থাৎ মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত হাত ধুতে হবে।