সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড: তদন্ত-তদন্ত খেলা বন্ধের দাবি সাংবাদিক নেতাদের
‘তদন্ত-তদন্ত খেলা’ বন্ধ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সাগর-রুনিসহ অন্যান্য সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতীকী অনশন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কর্মসূচিটির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, অন্যরা যদি বিচার পায় সাংবাদিকেরা কি অপরাধ করল আমাদের বিচার হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সহকর্মীদের নির্যাতন হত্যার বিচার চাইলে আপনার সাড়া দেন না, এর রহস্য কী। না পারলে ঘোষণা দেন, সাংবাদিকদের ওপর যত নির্যাতনই হোক, তাঁরা বিচার পাবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আন্তরিকতা থাকলে, সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গত ১১ বছরে ১১০০ অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙে না। মন্ত্রী আশ্বাস দেন, কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয় না। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যত সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তার কোনটির বিচার হয়নি। দু–একটার যা হয়েছে, তা নিয়েও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ৩০ দিনের মধ্যে সাগর-রুনিসহ সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করা হলে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাকারিয়া কাজল বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সাগর রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে, এমন ঘোষণার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতার অভাব নেই তবে সাগর রনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে আসলে তারা ঠুঁটোজগন্নাথ হয়ে যান বলে মন্তব্য করেন এই সাংবাদিক নেতা। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে না চাইলে বলে দিন, এটা ক্লোলেস মার্ডার এটার বিচার হবে না।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘তদন্ত-তদন্ত খেলা’ বন্ধে আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক নির্বাহী সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল বলেন, ‘১১ বছরেও আমরা জানতে পারলাম না, কারা তাঁদের হত্যা করল। তদন্ত তদন্ত খেলার চাই না, তদন্ত প্রতিবেদন সাংবাদিক সমাজের বিপক্ষে গেলেও সেটি প্রকাশ করা হোক।’
কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দিন ওই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। ১১ বছরে ৯৫ হাজারের বেশি ঘণ্টা চলে গেছে, কিন্তু কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা আর কত অপেক্ষা করব।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য দেন।
প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শেষে বেলা দেড়টার দিকে সাংবাদিক নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যান। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।