ঢাকায় বিশেষ দায়িত্বে আসছেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পদে পিটার হাসের উত্তরসূরি হিসেবে ডেভিড মিলিকে মনোনীত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন সিনেটে মনোনয়নের শুনানি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ঢাকায় আসছেন না ডেভিড মিলি।
বাংলাদেশে পিটার হাসের উত্তরসূরি হিসেবে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত না আসা পর্যন্ত সাবেক কূটনীতিক ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। মূলত বাংলাদেশে সংস্কারপ্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো চলতি সপ্তাহে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পিটার হাসের উত্তরসূরি যোগ দেওয়ার আগপর্যন্ত ট্র্যাসি জ্যাকবসন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স-সিডিএ) হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন। এটি জানিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনের সূত্রগুলো জানিয়েছে, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহে ট্র্যাসি জ্যাকবসনের ঢাকায় এসে দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকায় দায়িত্ব নেওয়ার আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে তিনি বুধবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী মিয়ানমারের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ট্র্যাসি জ্যাকবসনের মতো একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিককে অন্তর্বর্তী সময়ে ঢাকায় বিশেষ দায়িত্বে পাঠানো হচ্ছে।
জর্জ হপকিনস ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী পেশাদার কূটনীতিক ট্র্যাসি জ্যাকবসন তুর্কমিনিস্তান, তাজিকিস্তান ও কসোভোয় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি মার্কিন কূটনীতিক হিসেবে রাশিয়া, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও লাটভিয়ার মার্কিন দূতাবাসে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। ২০১৭ সালে কূটনীতিক হিসেবে অবসরে যাওয়ার আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে উপনির্বাহী সচিবের পদে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁকে অবসর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা পদে ফিরিয়ে আনেন। ওই বছরই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আফগানিস্তান–সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের পরিচালক হন ট্র্যাসি জ্যাকবসন। এরপর তাঁকে ইথিওপিয়ায় দেড় বছরের জন্য ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জো বাইডেন ইরাকে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে তাঁকে মনোনীত করেন। গত বছরের জুনে ওই মনোনয়নের বিষয়ে মার্কিন সিনেটে শুনানি হলেও নিয়োগটি ঝুলে ছিল।
ঠিক ১৭ বছর আগে দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ঢাকায় যাওয়া–আসার মাঝখানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। কাকতালীয় হলেও ২০০৭ সালের মতো এবারও বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব পালনের সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব কিছুদিন পালন করবেন সিডিএ। ওই সময় ২০০৬ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস। কিন্তু ১৪ মাসের মাথায় হঠাৎই মার্কিন প্রশাসন তাঁকে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়। ফলে তিনি বেশ তাড়াহুড়া করেই ঢাকা ছেড়ে যান। ২০০৮ সালের এপ্রিলে জেমস এফ মরিয়ার্টি পরের মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে ৯ মাস ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছিলেন গীতা পাসি।