ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আওয়ামী সিন্ডিকেট’ ভেঙে দেওয়ার দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সিন্ডিকেটকে ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী নিপীড়ক সিন্ডিকেট’ আখ্যা দিয়ে তা ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নীতিনির্ধারণী ফোরামকে শিক্ষার্থীবান্ধব ও গণতান্ত্রিক করে গড়ে তোলারও দাবি জানিয়েছেন।
আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সমাবেশের আগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
সিন্ডিকেটে সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতিসহ সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়। এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগপন্থী।
সমাবেশে ‘আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ ও ‘ফ্যাসিবাদের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়।
পরে সমাবেশে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছাত্রী ইসরাত জাহান বলেন, ‘আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক সিন্ডিকেট আসুক। বর্তমান সিন্ডিকেট শেখ হাসিনার দোসর সিন্ডিকেট। ছাত্রবান্ধব ক্যাম্পাসের জন্য আমরা প্রয়োজনে আইনেরও পরিবর্তন চাই। বর্তমান সিন্ডিকেটের কাছে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নন৷ তারা ক্যাম্পাসে অন্যায্য পরিবেশ তৈরি করেছে। এই ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে আওয়ামীপন্থী নীল দলের সব শিক্ষককে সিন্ডিকেট থেকে পদত্যাগ বা অপসারণ করতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব সিন্ডিকেট চাই।’
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ফাতিন ইশরাক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর বর্তমান সিন্ডিকেটের কোনো বৈধতা নেই। কিন্তু উপাচার্য তাঁদের নিয়েই সভা করেছেন। অবিলম্বে গণতান্ত্রিক ও নির্দলীয় শিক্ষার্থীবান্ধব সিন্ডিকেট গঠন করতে হবে।
দর্শন বিভাগের ছাত্রী অদিতি ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেট নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়নি। এই অগণতান্ত্রিক সিন্ডিকেটকে বহাল রাখা যাবে না। স্বৈরাচারের সঙ্গে কোনো সহাবস্থান হতে পারে না।
উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র প্রান্ত মাহমুদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো উপাচার্য-প্রক্টরের সঙ্গে সভা করছেন। তাঁরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চান। অন্যায় ও গণহত্যার সমর্থনদাতা এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করছি।’ এই সিন্ডিকেট ভেঙে না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনেরও চেয়ার থাকবে না, বলে হুমকি দেন তিনি।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্র নিনাদ খান বলেন, নীল দলের যাঁরা সিন্ডিকেটে আছেন, তাঁদের সরাতে হবে। গঠনতান্ত্রিক উপায়ে এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে৷ প্রশাসন যদি তা না করে, তাহলে আমরা গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যেভাবে সংসদ ভেঙে দিয়েছি, সেভাবে সিন্ডিকেটও ভেঙে দেব।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের ছাত্র রাজেকুজ্জামান জুয়েল, প্রাচ্যকলা বিভাগের সাজিদ উল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।