সুন্দরবনে ৬ বছরে বাঘ বেড়েছে ১০ শতাংশ

বাঘ জরিপ ২০২৪-এর ফলাফল ঘোষণা করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ঢাকা, ৮ অক্টোবরছবি: পিআইডি

সুন্দরবনে ২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ সালের জরিপে পাওয়া গেছে ১২৫টি। অর্থাৎ গত ছয় বছরে প্রায় ১০ শতাংশ বাঘ বেড়েছে সুন্দরবনে। প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ২ দশমিক ৬৪টি।

আজ মঙ্গলবার বাঘ জরিপ ২০২৪–এর ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ ছিল, ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। ২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায়, আর ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে আটটি বাঘ বেড়েছিল। বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ২০২৩-২৪ সালের জরিপে ২১টি বাঘশাবকের ছবি পাওয়া গেছে। তবে শাবকদের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ, ছোট বয়সে শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ২০১৫ ও ২০১৮ সালে মাত্র পাঁচটি শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জরিপের ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এ কাজে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়।

জরিপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হয়। এ কাজে সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রিডে ১ হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন রেখে দেওয়া হয়। যার মধ্যে ৩৬৮টি গ্রিডে বাঘের ছবি পাওয়া যায়। ১০ লাখের বেশি ছবি ও ভিডিও থেকে ৭ হাজার ২৯৭টি বাঘের ছবি পাওয়া যায়। এত বেশি বাঘের ছবি এর আগে পাওয়া যায়নি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর দেশের সবার জন্য আনন্দের। বাঘ সংরক্ষণে সরকার ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ বন রক্ষিত এলাকা ঘোষণা, ৬০ কিলোমিটার নাইলন ফেন্সিং (সীমানাপ্রাচীর), ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ক্ষতিপূরণ ও পুরস্কার প্রদান, ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। তবে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতাও প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আজিজ, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে, প্রকল্প পরিচালক আবু নাসের মোহসিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন