ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে ভাঙচুর ও হামলা করা হয়। এসব কার্যালয়ে এখনো নাগরিক সেবা স্বাভাবিক করা যায়নি। জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে থাকায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সোনাগাজীতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলররা কেউই ৫ আগস্টের পর থেকে কার্যালয়ে আসছেন না। উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মধ্যে আট ইউপির চেয়ারম্যান আত্মগোপনে। কেবল নবাবপুর ইউপির চেয়ারম্যান জহিরুল আলম কার্যালয়ে আসছেন। তিনি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। ইউপি সদস্যদেরও বেশির ভাগ আত্মগোপনে।
সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশের মূল ফটকে তালা ঝুলছে। বাইরে অবস্থান করছেন কয়েকজন গ্রাম পুলিশ। বারান্দায় বিভিন্ন নথি ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে। চেয়ারম্যান ও সচিবের কক্ষ, ডিজিটাল সেন্টার, গ্রাম আদালত—সবই তছনছ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদ, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে কার্যালয়েও দেখা যায়, বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গ্রাম পুলিশের সদস্যরা কার্যালয় পাহারা দিচ্ছেন।
চরচান্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রবাসী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একটি নাগরিক সনদ প্রয়োজন। একই সঙ্গে গত সপ্তাহে দুই ছেলের জন্মসনদের জন্য আবেদন করেছিলাম। তিন থেকে চার দিন ধরে পরিষদের আসছি। কিন্তু কাউকে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে ইউপি সচিব সুব্রত চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙচুরে কার্যালয় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কবে নাগাদ নাগরিক সেবা স্বাভাবিক করা যায়, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, ‘কয়েকটি ইউপিতে সচিব ও উদ্যোক্তারা যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানরা উপস্থিত না থাকায় সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনুপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা কবে ফিরবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এখন সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব।’