যেভাবে ধসের ঝুঁকি কমাতে বান্দরবানে চলছে সড়ক সংস্কার

বান্দরবান-ওয়াইজংশন-রুমা সড়কে চলছে সংস্কার কাজ। গত শুক্রবার বেলা ৩ টায় দলিয়ানপাড়া এলাকায়প্রথম আলো

বর্ষা এলেই পাহাড় ও সড়কধসে পড়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে বান্দরবানে। তবে এবার এই ধরনের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ সংস্কারকাজ চলছে বান্দরবানের ওয়াইজংশন-রুমা-থানচি সড়কে। গত কয়েক বছরের পাহাড়ধসের ধরন ও মাত্রা সমীক্ষা করে এই কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৬ নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)।

বর্ষা মৌসুমে প্রায়ই সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে পড়ে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এবারের সংস্কার শেষ হলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা আর ঘটবে না বলে আশাবাদী ২৬ ইসিবির প্রকৌশলীরা। তাঁরা জানান, পাহাড়ধসের কারণে যাতে সড়কে যান চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটে, সে লক্ষ্যে সড়কের কোথাও প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হচ্ছে, কোথাও সড়ক পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে।

বান্দরবানের থানচি সড়কের চিম্বুকচূড়ার পরে পাতুইপাড়া এলাকায় গত বছরের বর্ষায় সড়কসহ বিশাল পাহাড়ধসে পড়ে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে নতুন করে নির্মাণ করা সড়কটিতে সংস্কারকাজ চলছে। একইভাবে রুমা সড়কের দলিয়ানপাড়া ও জামিনীপাড়াতেও গত বছর পাহাড়ধস হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে পানিনিষ্কাশনের জন্য বড় নালা তৈরি করা হয়েছে। খাড়া পাহাড় থেকে পানি যাতে সহজে সরতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

২৬ ইসিবির প্রকৌশলীরা জানান, আগের বিভিন্ন পাহাড় ও সড়কধসের ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সড়কের নালায় পানির ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এরপর সড়কধসে পড়ে। পাহাড়ের বনাঞ্চল কমায় বৃষ্টির পানি সরাসরি মাটিতে পড়ে। এতেও পাহাড়ধসের ঝুঁকি বাড়ে। এই অবস্থায় পাহাড়ের পানি যাতে জমাটবদ্ধ হয়ে না থেকে এবং সড়কেও যাতে জলাবদ্ধতা না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রুমা সড়কের দলিয়ানপাড়ার কার্বারী (পাড়াপ্রধান) লালডিং ঙাক বম বলেন, বর্ষায় তাঁদের এলাকায় পাহাড় ও সড়কধসের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। গত বছরও সড়কধসে ২০ দিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। ২০১৭ সালে যাত্রীদের ওপর পাহাড়ধসে সাতজনের মৃত্যু হয়। তখনো এক মাস যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। তবে এখন যেভাবে সড়ক প্রস্তুত করা হচ্ছে, তাতে সড়কধসে পড়ার ঘটনা কমবে।

মো. আবু রায়হান নামে এক ট্রাকচালক বলেন, এ বছরও পাহাড়ধস হচ্ছে না, এমন নয়, তবে আগের মতো এর প্রভাবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ছে না। মাটি দ্রুত সরিয়ে নিয়ে চলাচলের উপযোগী করা যাচ্ছে।

২৬ ইসিবির মেজর মুসফিকুর রহমান বলেন, সড়কের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সড়ক পুনর্নির্মাণের কাজ এখনো চলমান। কাজ শেষ হলে পাহাড় ও সড়ক ধসে কোনো এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে না।