তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সামিটের টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে। সিঙ্গাপুর থেকে মেরামত শেষে দেশে ফেরার পর গ্যাস সরবরাহ চালুর আগেই আবার দুর্ঘটনায় পড়েছে সামিটের টার্মিনাল।
আগামীকাল সোমবারের পর সামিটের টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে বলে ৪ জুলাই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ১০ জুলাই সামিটের টার্মিনালটি বঙ্গোপসাগরে মহেশখালীর কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছায়। এরপর গ্যাস সরবরাহ শুরুর প্রস্তুতি নিতে থাকে। এর মধ্যেই টার্মিনালের মেসেঞ্জার লাইনে জটলা বাধে। এখন এটি মেরামতে সিঙ্গাপুর থেকে একটি বিশেষ দল আনা হচ্ছে।
দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দিনে সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয় ৩০০ থেকে ৩১০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত। এর মধ্যে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। একটি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এখন দিনে এলএনজি সরবরাহ হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট। দিনে মোট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৬০ কোটি ঘনফুট। এতে শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন খাতে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে।
আজ রোববার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সামিট জানিয়েছে, ১১ জুলাই সমুদ্রের তলদেশে ডিসকানেক্টেবল টারেট মুরিং (ডিটিএম) প্লাগ ও ল্যান্ডিং প্যাডের সঙ্গে টার্মিনালটি নোঙর করার প্রস্তুতির সময় আকস্মিকভাবে ডিটিএম বয়া মেসেঞ্জার লাইনে জটলা বাধে, মেসেঞ্জার লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় ডুবুরিরা এ জটলা খুঁজে পান। ক্ষতিগ্রস্ত মেসেঞ্জার লাইনটি সমুদ্রের তলদেশ থেকে উদ্ধারের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে অধিকতর পর্যবেক্ষণের জন্য গভীর সমুদ্রে ডুব দিতে পারদর্শী এমন ডুবুরি ও ডাইভিং সাপোর্ট ভেসেল (ডিএসভি) প্রয়োজন। সিঙ্গাপুরভিত্তিক এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ডুবুরি দল আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাদের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দেবে বলে আশা করছে সামিট।
তবে কবে নাগাদ গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে, তা নিশ্চিত করতে পারছে না সামিট। তারা বলছে, সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত লাইনটি মেরামত করার পর পুনরায় গ্যাস সরবরাহের সময় জানানো হবে।
সামিট বলছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় শত শত টন ওজনের ভাঙা একটি ইস্পাত কাঠামো সামিট এলএনজি টার্মিনালকে আঘাত করে। এতে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ঝড়ের মধ্যেও সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো গেছে। এরপর এটি সিঙ্গাপুরে নিয়ে মেরামত করে দেশে আনা হয়। দ্রুত গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে সামিট নিরলসভাবে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।