উত্তরে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে
শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। তাপমাত্রার পারদ নেমে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের বেশির ভাগ এলাকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ওই অঞ্চলের কয়েকটি জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ বুধবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। দিনে কুয়াশা কমে রোদের দেখা পাওয়া গেলেও সন্ধ্যার পর শীত আরও বাড়তে পারে। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা কমে ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হিমেল বাতাস বইতে শুরু করেছে। এতে শীতের অনুভূতি ও কষ্ট বেড়ে গেছে। কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌপথে চলাচলে দূরের জিনিস কম দেখা যাচ্ছে। এতে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। উড়োজাহাজ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীকাল বৃহস্পতিবারও একই ধরনের আবহাওয়া থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের শীতলতম মাস জানুয়ারি। শীতকালে এই মাসে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। দেশের উত্তরাঞ্চলে আজ বুধবার থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী শুক্রবার থেকে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে কুয়াশার কারণে বিকেল থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশি থাকতে পারে।
প্রথম আলোর নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেড়েছে। ২৬ ডিসেম্বর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে ৭০৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগের সপ্তাহে (১৯–২৫ ডিসেম্বর) এমন সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৭১।
নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশীষ কুমার সরকার বলেন, তীব্র শীতে শিশুরা ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে বেশি ভুগছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের বুকের দুধ পান করাতে হবে। ঠান্ডা এ বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত কাছের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে গোটা জেলাজুড়ে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল পথঘাট। এ কারণে বাস–ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনকে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। তীব্র শীতে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের ভোগান্তি বেড়েছে। কষ্ট বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
সৈয়দপুর প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল বেলা দেড়টা পর্যন্ত সৈয়দপুরে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করেনি। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, কুয়াশার কারণে ফ্লাইটের সময় এলোমেলো হলেও কোনো ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি।
সিলেট প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পেরে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ৫টি উড়োজাহাজ। দুটি উড়োজাহাজ পার্কিংয়ের সময় একটির সঙ্গে অন্যটির পাখায় ধাক্কা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ গতকাল রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচটি উড়োজাহাজের মধ্যে যাত্রী নিয়ে চারটিই সিলেট ছেড়ে গেছে। অন্যটির মেরামত কাজ চলছে।