শীতেও ত্বক থাকুক প্রাণবন্ত
সকালের হিমশীতল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতকালের উপস্থিতি। এই বার্তা সবার আগে পৌঁছে যায় আমাদের ত্বকে। শীতের শুষ্কতা কেড়ে নেয় ত্বকের আর্দ্রতা। ত্বক শুষ্ক, তৈলাক্ত, স্বাভাবিক কিংবা মিশ্র—যে ধরনেরই হোক, এই ঋতুতে প্রভাব পড়বেই। তাই এই সময়ে ত্বকের যত্নে হতে হবে আরও সচেতন। ত্বককে সতেজ, সুন্দর আর উজ্জ্বল রাখতে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায়ও আনতে হবে কিছু পরিবর্তন।
শীতে ত্বকের সবচেয়ে ওপরের স্তর এপিডারমিসে পানির পরিমাণ কমতে থাকে। এ সময়ে আমাদের পানি খাওয়ার পরিমাণও কমে যায়। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও শুষ্ক।
তাই পানি পান করতে হবে পর্যাপ্ত। এড়িয়ে চলতে হবে ফাস্ট ফুড, ভাজা-পোড়া খাবার ও সফট ড্রিংকস। পাশাপাশি প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর ফল ও শাকসবজি। এতে যেমন পানির অভাব পূরণ হবে, পাশাপাশি ত্বক তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলও পাবে। ত্বকের যত্নে কাজে লাগে, পুষ্টি উপাদানযুক্ত এমন কিছু পণ্য এ সময় আপনার ত্বককে রাখবে কোমল ও উজ্জ্বল।
এ বিষয়ে প্রাভা হেলথের কনসালট্যান্ট শারমিনা হক বলেন, ‘শুধু খাবারের মাধ্যমে সব সময় ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব পূরণ হয় না। আর শীত মৌসুমে তো ত্বকের পুষ্টিঘাটতি আরও বেড়ে যায়। এ সময় যেসব ত্বকের যত্নে যেসব পণ্যে সোডিয়াম হায়ালুরোনেট, সোডিয়াম পিসিএ, কোলাক্সিল, প্যানথেনলের মতো উপাদান থাকে, সেগুলো ব্যবহার করা উচিত। সোডিয়াম হায়ালুরোনেট ও সোডিয়াম পিসিএ ত্বকের আর্দ্রতা হারাতে দেয় না। কোলাক্সিল ক্রমাগত আমাদের কোষে পানির সরবরাহ করে কোলাজেন সিনথেসিস ঘটায়। আর প্যানথেনল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ায় ও ময়েশ্চার লেয়ারকে স্ট্রং করে। তাই এই সিজনে ত্বকের যত্নে এ ধরনের উপাদানযুক্ত পণ্য আপনার ত্বককে রাখবে সুস্থ ও সুন্দর।’
বর্তমানে দেশে বিভিন্ন রকম আন্তর্জাতিক মানের এসব পণ্য পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্কিন কেয়ার ব্র্যান্ড সিওডিল রূপবিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ডার্মাটোলজিস্টদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে। ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল রাখতে এ ব্র্যান্ডের পণ্যের মধ্যে আছে সিওডিল ময়েশ্চারাইজিং জেল ও সিওডিল ময়েশ্চারাইজিং মিস্ট।
সবচেয়ে ভালো হয়, যদি ময়েশ্চারাইজারের আগে সিরাম ব্যবহার করেন। কারণ, ত্বকের গভীরে গিয়ে শুষ্কতা দূর করে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সিরাম ভালো কাজ করে।
তবে মনে রাখতে হবে, ত্বক ভালো রাখতে হলে তা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা চাই। যেহেতু সময়টা শীত, ত্বক পরিষ্কার করতে ব্যবহার করতে পারেন মাইল্ড ক্লিনজার। এ সময় বাতাসে ধুলাবালুর পরিমাণ বেড়ে যায়। এর থেকে বাঁচতে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন ত্বক এক্সফোলিয়েট করুন। এতে ইমপিউরিটিজ দূর হওয়ার পাশাপাশি ড্রাই সেলও পরিষ্কার হবে।
শীতকালে আরও কিছু ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। এ সময় আলসেমি না করে চালিয়ে যেতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম। তাতে ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়বে, ত্বক থাকবে প্রাণবন্ত। শীত মৌসুমে অনেকেই নিয়মিত গোসল এড়িয়ে যান, যা একেবারেই উচিত নয়। অনেকেই আবার গোসলের সময় অতিরিক্ত গরম পানি গায়ে ঢালেন। এতে ত্বক আরও শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। যাঁদের ত্বক বেশি শুষ্ক, তাঁরা গোসলের আগে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে পুরো শরীর ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ, ঘুমটা হতে হবে পর্যাপ্ত। পরিপূর্ণ বিশ্রাম আপনার ত্বককে রাখবে সুস্থ ও সুন্দর। এ ছাড়া ত্বকের যেকোনো সমস্যায় অভিজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।