ইসি গঠনে অনুসন্ধান কমিটি হচ্ছে বিচারপতি জুবায়েরের নেতৃত্বে
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এ কমিটি নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপরিশ করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনুসন্ধান কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকছেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা হলেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুননেসা তাহমিদা বেগম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক সি আর আবরার। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম ।
এ প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাত্রা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সই হওয়ার পরই শিগগির এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলোই ছিল ভুয়া। এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। একটি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুন্দর নির্বাচন দেবে।
নির্বাচন দিতে কত সময় লাগবে, তা অনেকগুলো ‘ফ্যাক্টরের’(বিষয়ের) ওপর নির্ভর করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তার পরদিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকেই পদত্যাগ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ৫ সেপ্টেম্বর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসিও পদত্যাগ করে। এই কমিশন শপথ নিয়েছিল ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কথা বলা আছে। এতে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। কমিটির সদস্যদের মধ্যে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক (তিনি হবেন কমিটির সভাপতি), প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক, যাঁদের একজন হবেন নারী।
আইনানুযায়ী অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেওয়ার কথা।