নড়াইলের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, জানতে চায় মানবাধিকার কমিশন
নড়াইলে ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আজ রোববার কমিশনের দেওয়া এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানান কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম।
কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, নড়াইলের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা যথাযথ ছিল কি না, তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া এলাকার এক কলেজছাত্র গত শুক্রবার বিকেলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা দিঘলিয়া বাজারে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা চালায়। এ সময় একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একপর্যায়ে শটগান দিয়ে ফাঁকা গুলি করে। গতকাল শনিবার রাতে অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, নড়াইলের লোহাগড়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা স্থানীয় একটি বাজারের ছয়টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে। এ ছাড়া চারটি বাড়িঘর ও এর আসবাব ভাঙচুর করে টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মকে অবমাননা করার অধিকার যেমন কারও নেই, তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করার অধিকারও কাউকে দেওয়া হয়নি।
কমিশন মনে করে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ বারবার সংঘটিত হচ্ছে। কেউ ধর্মকে অবমাননা করলে তাঁকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া সমীচীন।
এ ঘটনায় পুলিশের যথাযথ ভূমিকা ছিল কি না, তা তদন্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দিতেও বলেছে কমিশন।