চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির গ্রেপ্তার দুই সদস্যের জামিন

চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত পরিবেশনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুই আসামি হলেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম ও নুরুল ইসলাম। দুজনই মাদ্রাসার শিক্ষক। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল সোমবার ওই দুই আসামির রিমান্ড শুনানিতে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বাগ্‌বিতণ্ডায় বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে যান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলিউল্লাহ। পরে রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেন আদালত।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, আদালত শুনানি শেষে দুই আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন। শুনানিতে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অংশ নেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। গত শুক্রবার নগরের কোতোয়ালি থানায় মহানগর পূজা কমিটির অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে কমিটির যুগ্ম সম্পাদক (বহিষ্কৃত) সজল দত্ত, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম, নুরুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ইকবাল, মো. রনি, গোলাম মোস্তফা, মো. মামুনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে মহানগর পূজা উদ্‌যাপন কমিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পূজা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত (ঘটনার পর বহিষ্কৃত) সেখানে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে পরিবেশনের আমন্ত্রণ জানান। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার দিন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পী অনুষ্ঠানে আসেন এবং দুটি গান পরিবেশন করেন। এর মধ্যে একটি গানের ভাষার শব্দচয়নে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার মতো মনে হয়। তবে পূজা উদ্‌যাপন কমিটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা চিন্তা করে গান বন্ধ করেনি।

ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ছয় সদস্য দুর্গাপূজার মঞ্চে দুটি গান পরিবেশন করেন। এর মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। সংগঠনটি জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ঘটনার দিন রাতে পূজামণ্ডপটিতে যান। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।