সংরক্ষণের জন্য এক হাজার উদ্ভিদের লাল তালিকা করেছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

বক্তৃতা রাখছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বাংলাদেশে উদ্ভিদের লাল তালিকা’ বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে, ১১ নভেম্বর ২০২৪ছবি: বাসস

সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এক হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের একটি লাল তালিকা তৈরি করেছে সরকার। এ তালিকা নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজ করবে।

তালিকা অনুযায়ী ২৭১ প্রজাতি ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত, ২৫৬ প্রজাতির তথ্য অপ্রতুল। ৩৯৫ প্রজাতি বিপদাপন্ন, যার মধ্যে ৫টি মহাবিপন্ন, ১২৭টি বিপন্ন এবং ২৬৩টি সংকটাপন্ন। এ ছাড়া ৭০টি প্রজাতি প্রায় বিপদগ্রস্ত অবস্থায় আছে। আর ৭টি প্রজাতি দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

আজ সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বাংলাদেশে উদ্ভিদের লাল তালিকা’ বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এ উদ্যোগ উদ্ভিদ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে সহায়তা করবে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ‘এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফ্লোরা অ্যান্ড ফনা ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ৩ হাজার ৮১৩ উদ্ভিদ প্রজাতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এগুলোর মূল্যায়ন জরুরি। এ তালিকা নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজ করবে। এটি পরিবেশগত স্থিতিশীলতা অর্জনে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখবে।

উপদেষ্টা বলেন, উদ্ভিদের লাল তালিকা সংরক্ষণবিদদের জন্য একটি অপরিহার্য তথ্যভান্ডার। এ তালিকা সংরক্ষণ প্রচেষ্টা ও সম্পদের কার্যকর বরাদ্দ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতির প্রভাব হ্রাসের জন্য আমরা পাঁচটি নির্বাচিত সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিশেষ ব্যবস্থাপনাকৌশল প্রণয়ন করেছি। গবেষণায় বাংলাদেশে ১৭টি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতি চিহ্নিত করা হয়েছে, যেমন কচুরিপানা ও আসাম লতা। এগুলো পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনছে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।’

ওই কৌশলগুলোর মধ্যে আগ্রাসী আচরণের কারণে দেশে আমদানি নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যিকীকরণ রোধ এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রয়োগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। এ উদ্যোগগুলো বন ও বনসম্পদ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এস এম হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম, অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ইশতিয়াক সোবহান, পরিবেশ সংগঠনগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের প্রতিনিধি সরওয়ার আলম।