শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলার বাদীকে আজ মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। এর আগে আদালত কক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বের হয়ে যাওয়ার মৌখিক নির্দেশনা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়।
আদালতের উদ্দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই মামলার বিচার কি ক্যামেরা ট্রায়ালে হবে? সাংবাদিকেরা কেন বেরিয়ে যাবেন? সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হবেন।’ পরে আদালতকক্ষে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে মামলার সাক্ষীকে জেরা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী।
১৩ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা।
আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার শুনানির শুরুতে বিচারক আদালতকক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বের হয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি এর প্রতিবাদ করলে আদালতকক্ষেই অবস্থান করে সাংবাদিকেরা খবর সংগ্রহ করেন।
তবে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতকক্ষ ছোট হওয়ায় বিচারক মামলার দুই পক্ষের আইনজীবী ছাড়া অন্যদের বের হয়ে যেতে বলেছিলেন। সাংবাদিকদের আলাদা করে বের হয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা আদালত দেননি।’
এদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে আদালতে উপস্থাপন করা তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ড. ইউনূসের আইনজীবী। আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে যে তালিকা উপস্থাপন করা হয়েছে, সেই তালিকার সঙ্গে আগের তালিকার মিল নেই। মামলার পর প্রতিষ্ঠানটির করা ওই তালিকার একটি কপি তাঁদের সরবরাহ করা হয়েছিল। সেই তালিকার সঙ্গে এখন আদালতে উপস্থাপন করা তালিকার মিল নেই। এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
অবশ্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবীর দাবি সঠিক নয় বলে আদালতকে জানিয়েছেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে তালিকা উপস্থাপন করা হয়েছে। সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।
গত ২২ আগস্ট ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। মামলায় অপর তিন বিবাদী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। গত ২৮ আগস্ট ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও ১৮টি মামলা করা হয়। এর আগে গত ৩০ মে ড. ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরও ১২ জনের নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।