খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেনছবি: বাসস

রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া যত দ্রুত সম্ভব দেশে নির্বাচন দেওয়া হবে। সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আজ (সোমবার) বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে আলোচনা হয়। শুরুতেই সেনাপ্রধান বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাঁর আলোচনা সম্পর্কে আমাকে অবহিত করেন। রাজনৈতিক নেতারাও এ সময় তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।’

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সব দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব সাধারণ নির্বাচন করবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আটকসহ সব বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেওয়া হবে। সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং লুটতরাজ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন ও শিল্প-কলকারখানা চালু রাখার লক্ষ্যে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন ও শিল্প-কলকারখানা চালু রাখার লক্ষ্যে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই। ছাত্রনেতা ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা হত্যা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অনতিবিলম্বে বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা হবে। দেশের সব অফিস-আদালত মঙ্গলবার থেকেই স্বাভাবিকভাবে চলবে।’

আরও পড়ুন

ভাষণের এক পর্যায়ে দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে এগিয়ে নিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য আমি সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন