নিপাহ ভাইরাস থেকে বাঁচতে করণীয় কী, জরুরি বার্তায় জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
নিপাহ একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক প্রাণঘাতী রোগ। নিপাহ নিয়ে জরুরি স্বাস্থ্য বার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা। আজ বৃহস্পতিবার এ বার্তা দেওয়া হয়। এ বার্তায় এ ভাইরাসে বাংলাদেশে আক্রান্ত হওয়ার চিত্র, এর লক্ষণ এবং প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি না করতে বিক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হয়েছে, কাঁচা খেজুরের রসে বাদুড়ের বিষ্ঠা ও লালা মিশ্রিত হয় এবং ওই বিষ্ঠা ও লালাতে নিপাহ ভাইরাসের জীবাণু থাকে। ফলে খেজুরের কাঁচা রস পান করলে মানুষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। বর্তমান সময়ে বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরেরা নিপাহ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
বার্তায় বলা হয়েছে, খেজুরের কাঁচা রস সংগ্রহ, বিক্রয় ও বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাছি ও জনসাধারণকে প্রাণিবাহিত সংক্রামক ব্যাধি নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে জানানো হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই রোগে মৃত্যু ৭০ শতাংশের বেশি। ২০২২-২৩ সালে দেশে এ রোগে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনই মৃত্যুবরণ করেন। তাই প্রতিরোধই হচ্ছে এই রোগ থেকে বাঁচার উপায়। খেজুরের রস বিক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ, কেউ কাঁচা রস খেতে চাইলে বিক্রি করবেন না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড় খেতে কোনো বাধা নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, কোনো অবস্থাতেই খেজুরর কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। নিপাহ ভাইরাস সাংঘাতিক রকমের সংক্রামক রোগ। যিনি খাবেন, তিনি ও তাঁর পরিবারের যেকোনো সদস্য এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
এখানে ৭০ শতাংশের বেশি মৃত্যুর আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক নাজমুল বলেন, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বেঁচে থাকলে প্রতিবন্ধিতা দেখা দিতে পারে। নিরাময়যোগ্য একটা রোগ শুধু শুধু অবহেলার কারণে ছড়িয়ে পড়বে, এটা হতে পারে না।
নিপাহ রোগের প্রধান লক্ষণগুলো:
১. জ্বরসহ মাথাব্যথা
২. খিঁচুনি
৩. প্রলাপ বকা
৪. অজ্ঞান হওয়া
৫. কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হওয়া।
নিপাহ রোগ প্রতিরোধে করণীয়:
১. খেজুরের কাঁচা রস খাবেন না
২. কোনো ধরনের আংশিক খাওয়া ফল খাবেন না
৩. ফলমূল পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে খাবেন
৪. নিপাহ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে অতিদ্রুত কাছাকাছি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন
৫. আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার পর সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন।