হাইকোর্ট ঘেরাওয়ে শিক্ষার্থীরা, বিক্ষোভ মিছিল আইনজীবীদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচিছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। আর ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইং।

আজ বুধবার হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি
ছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজের ব্যানারে আইনজীবীরা আজ সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা মিছিলও করেন। একপর্যায়ে তাঁরা অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রের ভঙ্গুর অবস্থার জন্য দলবাদ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিরাও দায়ী। এই বিচারপতিরা আওয়ামী লীগের নির্দেশ ও ইচ্ছাকে আইনে পরিণত করেছেন। তাঁদের জন্যই এত রক্তপাত হয়েছে। শেখ হাসিনা হাজারো ছাত্র-জনতাকে হত্যার সাহস পেয়েছেন। এত মানুষকে গুম, খুন ও হত্যার দায় এই বিচারপতিদেরও। তাঁরা এই বিচারপতিদের স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা তা করেননি। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর বিচারপতিরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল
ছবি: প্রথম আলো

কর্মসূচি চলাকালে আইনজীবীদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। এসব স্লোগানের মধ্যে আছে—‘আইনজীবী-জনতা, গড়ে তোলো একতা’, ‘দফা এক দাবি এক, দলবাজদের পদত্যাগ’, ‘ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আবু সাঈদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘দফা এক দাবি এক, দুর্নীতিবাজদের পদত্যাগ’।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে একটি মিছিল আদালত চত্বরে প্রবেশ করে। মিছিলটি অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইংয়ের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ
ছবি: প্রথম আলো

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাবি রিশাদ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে ফ্যাসিস্টদের দোসররা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে জটিলতা তৈরি করছে। আওয়ামী লীগের দোসররা ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনে কাজ করছে। তারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে কাজ করছে। এমনই একদল বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা এখানে অবস্থান নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট বিচারপতিরা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

পরে অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইং।

পূর্বঘোষিত হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি পালনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শত শত শিক্ষার্থীর একটি মিছিল আসে। তাঁরা অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

নিরাপত্তা জোরদারে আদালত প্রাঙ্গণে সেনাসদস্যরা
ছবি: প্রথম আলো

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ করতে হবে। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টদের দোসরদের যদি কেউ পুনর্বাসন করতে চায়, তাদেরও প্রতিহত করা হবে। পুনর্বাসনের চেষ্টা যে-ই করবে, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি চলবে না। ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিটি ঘটনার বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনাসহ যাঁরা বিদেশে পালিয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।