আমাদের আন্দোলন অহিংস, ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: সনাতনী জাগরণ জোট
নিজেদের আন্দোলনকে অহিংস বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা বলেছেন, এই আন্দোলনে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি সুমন রায় এ কথা বলেন।
চট্টগ্রামে সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফকে (৩৫) হত্যার ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুমন রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন কখনো সহিংস নয়। গতকাল (সোমবার) রাতে শাহবাগে আমাদের আন্দোলনের ভেতরে কিছু দুর্বৃত্ত ঢুকে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কারণ, তারা আমাদের অহিংস আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’ তিনি দাবি করেন, চট্টগ্রামে হিন্দু মনে করে ওই আইনজীবীর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। এখন চট্টগ্রামে অন্য হিন্দু আইনজীবীরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আগামীকাল বুধবারের মধ্যে জামিন দেওয়ার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয়। নইলে তাঁকে যে কারাগারে রাখা হবে, সেই কারাগারের উদ্দেশে লংমার্চ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি আরও বলা হয়, সনাতনীরা স্বেচ্ছায় সেই কারাগারে কারাবরণ করবেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) গ্রেপ্তার করেছে বলেও দাবি করেন জোটের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সাধারণ সনাতনীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে দেশীয় অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে হামলা’র প্রতিবাদে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার। এতে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে সনাতনী জাগরণ জোটের সমর্থকেরা রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে যান এবং কর্মকর্তাদের কাছে গ্রেপ্তারের তথ্য জানতে চান। কিন্তু কর্মকর্তারা কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোটের সমর্থকেরা শাহবাগ থানা-পুলিশের অনুমতি নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে শাহবাগ মোড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তখন কিছু উগ্রবাদী ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে জোটের প্রায় ৩০ সমর্থক আহত হন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। হামলায় দুই নারী সমর্থক শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হলেও তারা হামলা প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সনাতনী জাগরণ জোট সমাবেশে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং দেশের নাগরিক হিসেবে সনাতনী জাগরণ জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানায়।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নামঞ্জুর হওয়ায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল এটি শুনানির জন্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জোটের প্রতিনিধি অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী, পলাশ কান্তি দে, তন্ময় মৌলিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।