চীন তার বাণিজ্য সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) উদ্যোগ শুরু করেছে। ওই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়া দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়ার নামে অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সড়ক, সমুদ্রবন্দরসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ওই দেশগুলোয় পণ্য রপ্তানি বাড়াচ্ছে। এতে ওই দেশগুলো অনেক বেশি চীনের ওপর নির্ভর্রশীল হয়ে পড়ছে।
রাজধানীর এক হোটেলে আজ সোমবার ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে’ এক কর্ম অধিবেশনের প্ল্যানারি সেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনের এই সম্মেলনে বিআরআইয়ের এক দশক নিয়ে ‘দ্য ড্রাগনস ডোমেইন: বিআরআই আফটার এ ডিকেড’ শীর্ষক ওই কর্ম অধিবেশনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপনী হয়।
অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, চীন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্রনি ক্যাপিটালিজম বা স্বজনতোষী পুঁজিবাদকে উৎসাহিত করছে। ওই উদ্যাগের সঙ্গে থাকা দেশগুলোয় ব্যয়বহুল ও অপ্রয়োজনীয় সব প্রকল্প চাপিয়ে দিচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে দেশগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া করে দিচ্ছে।
ভারতের সামরিক নীতি গবেষণা সংস্থা মনোহর পারিকর ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিসের গবেষণা ফেলো শ্রুতি এস পট্টনায়েক বলেন, যেসব দেশ বিআরআই উদ্যোগে অংশ নিয়ে অপ্রয়োজনীয় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প নিয়েছে, তাদের সচেতন হতে হবে। কারণ, দিন শেষে এসব প্রকল্পের আর্থিক দায় এই দেশগুলোর জনগণের করের টাকাতেই মেটাতে হচ্ছে। ফলে দেশগুলোর সাধারণ মানুষকেও এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে।
চীনের জিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক আমেনা খান বলেন, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করিডর বা সিপ্যাক তৈরি হয়েছে, তার আওতায় দুই দেশের মধ্যে বড় বড় সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। এসব সড়ক দিয়ে চীন থেকে সার, কীটনাশক ও বীজ আমদানি করছে পাকিস্তান। এতে দেশটির কৃষি খাতের উন্নতি হচ্ছে।
জাপানের রাকুতেন সিকিউরিটিস ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা ফেলো ইয়োশিকাজু কাটোর সঞ্চালনায় অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন ইরানের তারবিয়াত মোদারেস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লালি গুল মোহাম্মদি ও চীনের ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সিয়া লিপিং বক্তব্য দেন।