ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ভবনমালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের (লিভ টু আপিল) শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। ফলে ওই মামলায় এ সময় পর্যন্ত সোহেল রানার জামিন স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
এ মামলায় সোহেল রানার জামিন মঞ্জুর করে (রুল অ্যাবসলিউট) ৬ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এরপর ৮ মে আপিল বিভাগ সোহেল রানার জামিন স্থগিত রেখে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল ১০ জুলাই শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার করেছেন আপিল বিভাগ। এই সময় পর্যন্ত ওই মামলায় সোহেল রানার জামিন স্থগিত থাকছে। জামিন স্থগিত থাকায় সোহেল রানা কারামুক্তি পাচ্ছেন না।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় একই বছরের ২৯ এপ্রিল বেনাপোল থেকে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় কয়েকটি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।
আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, ওই ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে ২০২২ সালে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন সোহেল রানা। আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেন। রুলের শুনানি শেষে গত ৬ এপ্রিল রুল অ্যাবসলিউট (জামিন মঞ্জুর) করে রায় দেন হাইকোর্ট।