এক আসনের বিপরীতে ৬২টি আবেদন

চট্টগ্রামের বিদ্যালয়গুলোয়কে এখন চলছে ভর্তির মৌসুমফাইল ছবি

চট্টগ্রামে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে নগরের কোতোয়ালি এলাকার সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয়ে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে মোট ৩২৬ শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ২২ হাজার ৭৬৩টি। প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে গড়ে ৭০টি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বছর সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ে প্রভাতি ও দিবা শাখায় মোট ৩৫৯টি শূন্য আসনে আবেদন জমা পড়েছিল ২৩ হাজার ৯২০টি। গড়ে আবেদন ছিল ৬৭টি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোরশেদুজ্জামান বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় অভিভাবকেরা এই বিদ্যালয়কে বেছে নেন। এ বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ৮ হাজার ১৬৯, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১০ হাজার ৯৫১টি ও নবম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৪৩টি আবেদন জমা পড়েছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, এ বছর চট্টগ্রামের ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে শূন্য আসন ২ হাজার ২৩৬টি। এসব আসনে ভর্তির আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৬টি। অর্থাৎ আসন অনুপাতে প্রতি আসনে আবেদন জমা পড়েছে ৬২টি। গত বছর প্রতি আসনে আবেদন জমা পড়েছিল ৫৭টি। গত বছর ২ হাজার ৪২৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬৪টি। এ বছর আসন ও আবেদন দুটিই কমেছে।

প্রতিবারই বছরের শেষ সময়ে এসে পরবর্তী বছরের ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভর্তি শেষে জানুয়ারিতে শুরু হয় ক্লাস। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীন দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক ও মহানগর ও জেলা সদর উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল ১২ নভেম্বর। গত ৩০ নভেম্বর শেষ হয় আবেদনপ্রক্রিয়া।

প্রতিযোগিতা বেশি নাসিরাবাদে

ভর্তি ইচ্ছুকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা নগরের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয়ে গড়ে প্রতি আসনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৯৪টি। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২১৬ আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে মোট ২০ হাজার ২৫৯টি। গত বছর এই বিদ্যালয়ে ২৩৪ আসনের বিপরীতে ১৮ হাজার ৮৮৮টি আবেদন জমা পড়েছিল। প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৮১টি।

বাকলিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ২৬৮টি আসনের বিপরীতে ১৫ হাজার ৪টি আবেদন জমা পড়েছে। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ২১৭টির বিপরীতে ১০ হাজার ৩৬৭টি, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ২১৮টির বিপরীতে ৯ হাজার ১২২টি, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ১১০টির বিপরীতে ৭ হাজার ৭৯টি ও চট্টগ্রাম সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে ১০১টি শূন্য আসনের বিপরীতে ৬ হাজার ২২৭টি আবেদন জমা পড়েছে।

বালিকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশি আবেদন পড়েছে চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। যেখানে গড়ে প্রতি আসনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৮৫টি। পঞ্চম, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে ২১৭টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ১৮ হাজার ৪৩২টি। এ ছাড়া ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ৩২৪টির বিপরীতে ১৯ হাজার ৫৩৫টি ও সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ২৩৯টির বিপরীতে ১০ হাজার ১৪৮টি আবেদন জমা পড়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পেরেছে। জেলা পর্যায়ে কোনো লটারি হবে না। কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় নির্ধারণ করা হবে।