কুষ্টিয়ায় লালন অনুসারী বৃদ্ধার ঘর ভাঙার প্রতিবাদ ২৫ বিশিষ্ট নাগরিকের

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের টাকিমারা গ্রামে লালন সাঁইয়ের অনুসারী বৃদ্ধা চায়না বেগমের বসতঘর ভেঙে দেওয়া ও তাঁকে হেনস্তা করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক। আজ রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানান তাঁরা।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন। এতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, সারওয়ার আলী, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ফওজিয়া মোসলেম, খুশি কবির, এম এম আকাশ, কাজল দেবনাথ, এস এম এ সবুর প্রমুখ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৬ জুন হামলা চালিয়ে টাকিমারা গ্রামের লালন অনুসারী চায়না বেগমের ঘর ভেঙে দেয় একই গ্রামের একদল বাসিন্দা। এ সময় চায়না বেগমকে হেনস্তা করা হয়। আক্রমণকারীরা তাঁকে হত্যারও হুমকি দিয়েছেন। স্বাধীন দেশে লালন অনুসারীর বসতিতে হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় বিশিষ্টজনেরা ব্যথিত ও বিক্ষুব্ধ।

বাউল ঘরানার ব্যক্তিদের ওপর আক্রমণের ঘটনা এটিই প্রথম নয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও না কোথাও প্রায়ই এই ধরনের হামলা, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে স্বভাব কবি রাধাপদ সরকারের ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল শিল্পী ও নাট্যকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে সব সময় ব্যর্থ হয়েছে। এতে সংহতিবিরোধী মানসিকতার সম্প্রসারণ ঘটছে।

চায়না বেগম এই হামলার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য (মেম্বার) এনামুল হক, মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল, সাইদুল হাজিসহ অজ্ঞাতনামা ৪৫-৫০ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া সদর থানায় অভিযোগ করেছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সদর থানা এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার না করে তথাকথিত ‘সুষ্ঠু সমাধানের’ চেষ্টা করায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁরা দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন।