মানবাধিকারকর্মী আল আমিনের দ্রুত মুক্তির দাবি

আল আমিন।
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অভিবাসীদের সুরক্ষা ও অধিকারের কাজে নিয়োজিত কর্মী আল আমিনের (নয়ন) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২০টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। দ্রুত মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।

রোববার বিসিএসএম সচিবালয়ের পক্ষে বিবৃতিটি পাঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) পরিচালক মেরিনা সুলতানা। এতে বলা হয়, আল আমিন ২০১৭ সাল থেকে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এক দশক আগের একটি ঘটনায়। ২০১৩ সালের ওই সময়ে শিসউক নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন আল আমিন। ওই প্রতিষ্ঠান তখন মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দিত। তিনি ইরাক থেকে ফেরত আসা কয়েকজন ভুক্তভোগীকে আদালতে মামলা করতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

এটিকে হয়রানিমূলক মামলা হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আল আমিনকে পুলিশ জানায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এরপর বিকেলেই তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার মূল নথি না থাকার কারণে তিনি জামিন পাবেন না বলে জানানো হয়। মামলাটি যেহেতু ঢাকার মানব পাচার ট্রাইব্যুনালে, সেখানে তাঁকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে বার্ষিক ছুটি চলমান থাকায় জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগে মানব পাচারের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হবে না। ফলে ওই রাতেই তাঁকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে পাঠানো হয়।

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২–এর ১৫(১) ধারায় আসামি করা হয়েছে আল আমিনকে। কেউ মিথ্যা মামলা করলে বা মিথ্যা মামলা দায়েরে বাধ্য করলে এই ধারায় আসামি করা যায়। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে এই ধারার অপপ্রয়োগ করা হয়েছে বলে মনে করছে বিসিএসএম।

বিবৃতিতে বলা হয়, আর মিথ্যা মামলার অভিযোগে নতুন করে মামলা করতে গেলে সাধারণত আগের মামলার বাদীকে আসামি করা হয়। সাক্ষীকেও আসামি হিসেবে আদালত গ্রহণ করেন না। অথচ প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে আল আমিনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। যদিও তিনি মামলায় বাদী বা সাক্ষী কিছুই ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, সততা ও নিষ্ঠার জন্য ২০২৩ সালে ব্র্যাকের স্যার ফজলে হাসান আবেদ মূল্যবোধ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আল আমিন। এর আগে ২০২০ সালে জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপি তাঁকে পরিবর্তনের রূপকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।