চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ ১৬ জনের পদত্যাগ, নতুন প্রক্টর নিয়োগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ ১৮টি পদ থেকে মোট ১৬ জন পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার বেলা দেড়টায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমেদ বরাবর চিঠি দিয়ে তাঁরা পদত্যাগ করেন। এরপর বেলা আড়াইটায় নতুন প্রক্টর নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ১৬ জনের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। এরপর নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পদত্যাগপত্রে সবাই ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন।

চিঠিতে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসন, পরিবহনসহ নানা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

গত সিন্ডিকেট নির্বাচন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, ডিন নির্বাচন সবকিছুতেই উপাচার্যের সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা শিক্ষকদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছেন, তবে এসব প্রতিশ্রুতি উপাচার্য রাখতে পারেননি। এ কারণে তাঁরা শিক্ষকদের কাছে হেয় হয়েছেন। উপাচার্যের সহযোগিতার অভাবে এসব কাজ ব্যর্থ হচ্ছে বলে তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের কার্যালয়ে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যাঁরা পদত্যাগ করলেন

একযোগে পদত্যাগ করা শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন—প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টর এস এম জিয়াউল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, রামেন্দু পারিয়াল, শাহরিয়ার বুলবুল, গোলাম কুদ্দুস লাভলু। এ ছাড়া রয়েছেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসব) অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক।

এ ছাড়া আবাসিক হলের দায়িত্ব থেকেও রদবদল হয়েছে। প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া শহীদ আবদুর রব হলের প্রাধ্যক্ষর দায়িত্বে ছিলেন। সে পদ থেকে তিনিও পদত্যাগ করেছেন। শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন সহকারী প্রক্টর শাহরিয়ার বুলবুল।

তিনিও এ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আনাবিল ইহসান, প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষক ফারজানা আফরিন, শহীদ আবদুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক এইচ এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ, রমিজ আহমদ, শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক শাকিলা তাসমিন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের জ্যেষ্ঠ আবাসিক শিক্ষক শাহ আলম, আবাসিক শিক্ষক নাসরিন আক্তার ও উম্মে হাবিবা, আলাওল হলের জ্যেষ্ঠ আবাসিক শিক্ষক ঝুলন ধর।

পদত্যাগ করার বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছিলেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। রবিউল হাসান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নতুন প্রক্টরও ঠিক করা হয়েছিল। এসবের প্রতিবাদে প্রক্টর তাঁর নিকটতম লোকদের নিয়ে পদত্যাগ করেন। ২০২০ সালের ২৯ জুন রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পান।

নতুন প্রক্টর নিয়োগ

এদিকে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার পদত্যাগের পরপরই নতুন প্রক্টর নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আজিম শিকদার। তিনি আজ বেলা আড়াইটার দিকে দায়িত্ব নিয়েছেন।

জানতে চাইলে মোহাম্মদ নুরুল আজিম শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি কাজ করবেন। উপাচার্য শিরীণ আখতার তাঁর প্রতি ভরসা রেখেছেন, এ জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সবার সহযোগিতা চান।