দিনে এক রকম, রাতে অন্য রকম তাঁরা
দিনের বেলায় টিকটক অ্যাপের জন্য ভিডিও তৈরি করতেন তাঁরা। সবাই ভাবত, এটাই তাঁদের কাজ বা পেশা। তবে রাতের বেলায় তাঁদের সেই কাজ বদলে যেত। তখন তাঁরা চুরি ও ছিনতাই করতেন।
এই চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থান এবং ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাইদুল ইসলাম, কামরুল হাসান, শাহীন ওরফে কাকা, মো. রানা, রবিউল হাসান, রানা ওরফে বোং ভাই, মো. নাসির ও দেলোয়ার হোসেন।
চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, নগরের রাইড শেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। চক্রের সদস্যরা মোটরসাইকেল চুরি ও ছিনতাইয়ে জড়িত। তবে এটিকে আড়ালে রাখতে তাঁরা দিনের বেলায় টিকটকের জন্য ভিডিও বানাতেন। গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রানা ওরফে বোং ভাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শিবঙ্কর কুমার বণিক। গত ১৮ এপ্রিল নগরের সল্টগোলা ক্রসিং থেকে তাঁর গাড়িতে ওঠেন রানা বোং ভাই। সেদিন রাত আটটার দিকে নগরের উত্তর কাট্টলী টোল রোডে এসে রানা নেমে যান। ওই সময় ওত পেতে থাকা রানার সহযোগীরা এসে শিবঙ্করকে লাথি মেরে খাদে ফেলে দেন। গেঞ্জি দিয়ে তাঁর মুখ বেঁধে ফেলে রেখে মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল তিনি আকবর শাহ থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, সাইদুলের দুই স্ত্রী। নগরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে তাঁদের নিয়ে টিকটিকের জন্য ভিডিও তৈরি করেন। পরে এগুলোর ভিডিও আপলোড করেন। যাতে সহজে কেউ তাঁকে সন্দেহ না করে। তাঁর দলে রয়েছেন চোর ও ছিনতাইকারী। তিনি নিজেও মোটরসাইকেল চুরিতে পারদর্শী। বিশেষ চাবির সাহায্য কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চুরি করতে পারেন। চক্রের সদস্যদের মধ্যে কেউ যাত্রীবেশে শেয়ার রাইড মোটরসাইকেলের পেছনে ওঠেন। আর কেউ সোর্স (তথ্যদাতা) হিসেবে কাজ করেন। ছিনতাই আর চুরি করা মোটরসাইকেলগুলো বিক্রির কাজ করেন কয়েকজন সদস্য।