আমরা ওয়াশিংটনকে থোড়াই কেয়ার করি: মাহমুদুর রহমান
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কে জয়লাভ করল না–করল, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ‘আমরা ওয়াশিংটনকে থোড়াই কেয়ার করি’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘ট্রাম্পের বিজয়ের পরে অনেকে মনে করতে শুরু করছে যে তারা বোধ হয় ক্ষমতায় চলে এসেছে। আমার বড় শক্তিটা কী জানেন এই বিপ্লবের, এই বিপ্লবে বিদেশি কোনো সমর্থন ছিল না।’
‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান’ শিরোনামে একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে মাহমুদুর রহমান এসব কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বইটির প্রকাশনা উৎসব হয়। বইটি লিখেছেন সাহাদত হোসেন খান।
জো বাইডেন, কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসল, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র–জনতা তাদের শক্তিতে বিপ্লব করেছে। আমরা ওয়াশিংটনকে থোড়াই কেয়ার করি। কাজেই ওয়াশিংটনে ট্রাম্প আসলে আমাদের বিপ্লব ক্ষতিগ্রস্ত হবে, পতিত ফ্যাসিবাদ আবার চলে আসবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান বইয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রতি ‘অবিচার’ নিয়ে একটি লেখা রয়েছে। সেই লেখা নিয়ে আপত্তি তোলেন মাহমুদুর রহমান। তাঁর মতে, ‘বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা হতে পেরেছে, যাদের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে, সেই ক্রিমিনালদের মধ্যে একজন হচ্ছে এস কে সিনহা। সেই এস কে সিনহাকে কোনোভাবে কোনো বইতে তাঁর সম্পর্কে সহানুভূতি সুলভ কোনো কিছু লেখার সুযোগ নাই। এটা যিনি লিখবেন, তিনি ইতিহাস বিকৃতি করেছেন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে (আইসিটি) যেসব ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তার প্রধান কারিগর ছিলেন এস কে সিনহা বলেও অভিযোগ মাহমুদুর রহমানের। তিনি বলেন, ‘এস কে সিনহার সঙ্গে হাসিনার যে প্রবলেম (সমস্যা) ছিল, সেটা ছিল ক্ষমতার লড়াই। তার মানে দুই ক্রিমিনালের ক্ষমতার লড়াইতে এক ক্রিমিনাল (অপরাধী) আরেক ক্রিমিনালকে ঘাড় ধরে বাংলাদেশ থেকে বের করে দিয়েছে।’
এস কে সিনহার প্রতি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সহানুভূতির সমালোচনা করেন মাহমুদুর রহমান। এস কে সিনহা গণতন্ত্র হত্যা করেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা খায়রুল হকের (সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক) নাম জানি। কিন্তু খায়রুল হকের সঙ্গে যে লোকটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার জন্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি বাতিলের জন্য, সেই লোকটির নাম এস কে সিনহা।’
বাংলাদেশ স্বাধীনতা হারিয়ে ভারতের ‘আশ্রিত রাজ্যে’ পরিণত হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদুর রহমানের। তিনি বলেন, ছাত্র–জনতার আন্দোলন ভারতের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন। ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবন সুন্দর করার জন্য ন্যায়, নীতি ও নৈতিকতার সঙ্গে জীবনযাপনের পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন সাবেক সেনাপ্রধান নূরুদ্দিন খান। অন্যদের মধ্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইনজীবী সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন।